g অচল ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বাস্থ্য বিভাগ | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মঙ্গলবার, ২৫শে জুলাই, ২০১৭ ইং ১০ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

অচল ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বাস্থ্য বিভাগ

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ৯, ২০১৭

---

শাহআলম ১১ দিনে অফিস করছেন ১ দিন, দায়িত্ব পেতে মুসা যাচ্ছেন নিয়মিত

আমিরজাদা চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জনের চেয়ার আকড়ে বসে থাকলেও অফিস করছেননা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) নেতা ডাক্তার মো: শাহআলম। অন্যদিকে মন্ত্রনালয় থেকে দায়িত্ব পাওয়া ডা.আবু ছালেহ মো. মুসা খান দায়িত্ব বুঝে নিতে নিয়মিত অফিসে যাচ্চেন। কিন্তু তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছেনা। বরং মুসা নিয়মিত অফিসে যাওয়ায় তাকে শাসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ সভাপতি ডাক্তার আবু সায়ীদের বিরুদ্ধে। এ অবস্থার কারনে গত এক সপ্তাহ ধরে অচল হয়ে পড়েছে সিভিল সার্জন অফিসসহ জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কাজকর্ম। এদিকে খোজ নিয়ে জানা গেছে এরআগেও সিভিল সার্জন যোগদান করতে এলে এমন কান্ড করেন স্বাচিবের ওই প্রভাবশালী নেতা। এক সিভিল সার্জন ১৫ দিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরার পর দায়িত্ব বুঝে পান। কিন্তু ওই নেতার কথামতো লোক নিয়োগ না করায় সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে সিভিল সার্জনকে জুতা ছুড়ে মারেন ও থুথু নিক্ষেপ করেন। সুত্র জানিয়েছে এবারো সামনে স্বাস্থ্য বিভাগে বড় নিয়োগ রয়েছে। আর এই নিয়োগকে সামনে রেখে স্বাচিবের ওই নেতা তার অনুগত কাউকে সিভিল সার্জনের চেয়ারে বসাতেই করছেন এ দেনদরবার। যা তাদের এক রেওয়াজে পরিনত হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে গত ২৭ শে ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.আবু ছালেহ মো. মুসা খানকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জনের চলতি দায়িত্বের আদেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারী হয়। এতে ৩১/১২/২০১৬ তারিখের পর যোগদান করতে বলা হয় তাকে। অন্যদিকে ২৯ শে ডিসেম্বর অবসরজনিত ছুটিতে যাওয়া সিভিল সার্জন হাসিনা আক্তারের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা স্বাচিবের সাধারন সম্পাদক মো: শাহআলম। মন্ত্রনালয়ের আদেশ নিয়ে মুসা খান ২ রা জানুয়ারী সিভিল সার্জন অফিসে যোগদান করতে গেলে শুরু হয় তালবাহানা। দায়িত্বে থাকা সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম মুসা খানের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে নিজের দখলে রাখেন চেয়ার। ব্যর্থ হয়ে ২রা জানুয়ারী স্বাস্থ্য সচিবের কাছে যোগদানপত্র পাঠিয়ে দেন মুসা খান। রোববার পর্যন্ত তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ না করা এবং বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব করার অভিযোগ তুলে মুসা খানকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছেনা। অন্যদিকে চেয়ার দখলে রাখা ডাক্তার মো: শাহআলম গত ২৯ শে ডিসেম্বর দায়িত্ব নেয়ার পর গতকাল পর্যন্ত ১১ দিনে অফিস করেছেন মাত্র একদিন।
ডাক্তার মুসা খান বলেন- দায়িত্ব পেতে তিনি নিয়মিত অফিসে যাচ্ছেন। তবে কর্মচারীরা ভয়ে আমাকে কোন সহায়তা করছেনা। আমি বেহায়ার মতো অফিসে বসে থাকি। তিনি আরো জানান ডাক্তার আবু সায়ীদ তাকে ফোনে অফিসে না যেতে বলেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন হাসিনা আক্তার গত ২৯ শে ডিসেম্বর অবসরজনিত ছুটিতে যান। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে কথা বলে ঐদিন আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মো. শাহ আলমের কাছে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। সাধারনত সিভিল সার্জন কোথাও গেলে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকেই দায়িত্ব দেয়া হয়। এক্ষেত্রে মুসা খান সদর উপজেলার কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি।
এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে- ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বাচিব নেতা ডাক্তার আবু সায়ীদের এই চর্চা নতুন নয়। এরআগে ২০১৪ সালের জানুয়ারীর প্রথম দিকে ডাক্তার নারায়ন চন্দ্র দাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করতে এলে তাকে বাধা দেয়া হয়। দু-সপ্তাহ পর্যন্ত তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। এসময় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছেন নারায়ন। তখন ডাক্তার আবু সায়ীদ নিজেই সিভিল সার্জনের চেয়ারে ছিলেন। নারায়ন চন্দ্র দাশ পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের দারস্থ হলে তার নির্দেশে জেলা প্রশাসক বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। এরপর ওই বছরের ১৫ ই জানুয়ারীতে যোগদান করতে পারেন ডাক্তার নারায়ন। যোগদানের পর নিয়োগে ডাক্তার সায়ীদের মনরক্ষা না করায় ওই বছরের ৭ ই আগষ্ট ডাক্তার আবু সায়ীদ তার লোকজন নিয়ে নারায়নের সরকারী বাসায় গিয়ে চরাও হন। সঙ্গে নিয়ে যান তার অনুগত জেলা সদর হাসপাতালের ওয়ার্ড মাষ্টার আনোয়ার,এনাম ও অস্থায়ী ভিত্তিতে ঝাড়–দার পদে নিয়োজিত বিল্লাল নামের একজনকে। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়-এরমধ্যে বিল্লাল জুতা নিক্ষেপ করেন সিভিল সার্জনকে লক্ষ্য করে। সায়ীদ থুথু মারেন নারায়নের ওপর। এরপর রাতেই নারায়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে চলে যান। সুত্র জানায়- সামনে একটি বড় নিয়োগ হতে পারে। এই নিয়োগ কব্জা করতে এবারো স্বাচিব নেতারা পুরনো পন্থা অবলম্বন করছেন।

 

এ জাতীয় আরও খবর