বাঞ্ছারামপুরের জেলেরা পাচ্ছেনা সরকারি কোন সাহায্য সহযোগীতা! জীবন যুদ্ধে তারা এখন দিশেহারা
---
ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের জন্য দৈনন্দিন মাছের চাহিদা এই জেলে পেশাজীবিরা।সারা বছর ধরেই নদী -নালা থেকে মাছ ধরে মানুষের চাহিদা পূরণ করেন। তবে মাছ ধরার মৌসুম এলে ঝাড়-বৃষ্টির উপেক্ষা করে নদীতে দিনরাত পরিশ্রম করে হয় উপজেলার বিভিন্ন জেলে পাড়ার জেলেরা। মহাজনদের দাপট তাদের কাছ অতিসুদে অর্থ নেওয়া আর সরকারি কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধার জুটছে না বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সদর পৌর এলাকার কৈবর্ত্য পাড়া,মরিচাকান্দি,ছলিমাবাদের নিলখী, মিরপুর,সাবনগর,বাহেরচর,মানিকপুর,আইয়ূবপুর,দরিয়াদৌলত, শিবপুর,ফরদাবাদ ও রুপুসদী ইউনিয়নের দক্ষিণ ও উত্তর পাড়ার জেলেদের ভাগ্যে।
সরেজমিনে দক্ষিণ রূপসদী ইউনিয়নের জেলেপাড়ায় গিয়ে জানা যায়, তাদের দুর্দশার কথা, জেলেরা জানান ‘অনাবৃষ্টি, নদীখনন,নদী দখল,ডিমওয়ালা মাছ,রেনু পোনা মাছ ও জাটকা নিধন কারণে তিতাস ও ঢোলভাঙ্গা নদীতে আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। দাম ভাল পেলে কি হবে যদি নদীতে মাছই না থাকে তবে ভাগ্য খুলবে কিভাবে।
স্বপন চন্দ্র দাস জানায়, জাল বুঁনার সুতা কেজি ১শ ৮০টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৩শ টাকা। টাকার জন্য আমরা জাল বুনতে পারি না। ধার দেনা ও সুদে টাকা এনে রাতের ঘুম হারাম। আমরা সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা পাইনা। উপজেলা মৎস্য অফিস কখনোই আমাদের কোন খোঁজ খবর নেয়নি। মেঘনা নদীতে পনেরো দিন নদীতে জাল ফেলতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় সে সময় মাছ ধরা যায় না। যদিও এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের তরফ থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধা ৪০ কেজি চাল দেওয়া হয়। নদীতে মাছ ধরার সাথে সম্পৃক্ত নন, এমন কিছু অসাধু ব্যক্তি কৌশলে নিবন্ধিত হয়ে সুবিধাগুলো ভোগ করেন। ফলে প্রকৃত জেলেরা থাকেন বঞ্চিত। এ নিবন্ধনগুলো মৎস অধিদপ্তরের অফিসাররা করে থাকেন বলেও জানান জেলেরা।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শুভ্র সরকার জানান, আমরা জেলেদের জন্য বিভিন্ন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। তার মধ্যে বিকল্প আয় বর্ধক, সেলাই মেশিন, জাল ও প্রশিক্ষন প্রদান। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১২১টি গ্রামের মধ্যে আমাদের নিবন্ধিত জেলেদের সংখ্যা ৪ হাজার ৯শত জন, এর মধ্যে ছবি তুলেছেন ৪ হাজার ১শত জন এবং কার্ড পেয়েছেন ৩ হাজার ৬শ জন।
বাঞ্ছারামপুর পৌর মেয়র খলিলুর রহমান টিপু মোল্লা জানান, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা হচ্ছে সরকার ঘোষিত হাওড় এলাকা। এখানে জেলে বেশি। জলদস্যুরা নদীতে জেলেদের থেকে মাছ ছিনিয়ে নিয়ে যায়, মারধর করে, জাল ও নৌকা চুরি করে ছিনিয়ে নিয়ে যায়, জিম্মি করে বিকাশে টাকাও দাবি করে। তিনি সরকারের কাছে জেলেদের জন্য বিকল্প আয়ের ব্যবস্হা করে জেলেদের সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনার দাবি জানান।