বৃহস্পতিবার, ৮ই জুন, ২০১৭ ইং ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক সম্মেলন

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ২০, ২০১৭
news-image

---

পারভীন সুলতানা : ‘সাহিত্যিক আর সাহিত্যের সমৃদ্ধিই আমাদের অঙ্গীকার’ এই প্রত্যয়ী শ্লোগানকে সামনে রেখে ১৬ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ সকাল ১০ ঘটিকা থেকে দিনব্যাপী শাহবাগস্থ জাতীয় যাদুঘরের কবি সুফিয়া কাপমাল মিলনায়তনে সুসমাপ্ত হলো জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক সম্মেলন ২০১৫ এর প্রথম পর্বের জাতীয় সাহিত্য পরিষদ পদক ২০১৫ ও জাতীয় সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা সনদ ২০১৫ প্রদান অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সাহিত্য পরিষদের মহাসচিব সিরাজুল করিম জাতীয় সাহিত্য পরিষদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, সাংগঠনিক কার্যক্রম, গঠনতান্ত্রিক সংশোধন, প্রকাশনা, পুরস্কার-পদক ও সম্মাননা প্রদান, সংগঠনের আয়-ব্যয়, কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি এবং জেলা শাখার সভাপতি ও সম্পাদকের নামসহ ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক প্রতিবেদনের সারবার্তা উপস্থাপন করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক একই সময়ে আগারগাঁয়ে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান থাকায় জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক সম্মেলন ২০১৫ উপলক্ষ্যে জাতীয় সাহিত্য পরিষদ পদক ২০১৫ ও জাতীয় সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা সনদ ২০১৫ প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনন্য অহংকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি এবং বিশেষ অতিথি বাংলা একাডেমির মাননীয় মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান অনূষ্ঠানে উপস্থিত হতে পানেনি। তাই জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর সভাপতি মোবারক হোসেন খান অসুস্থ্য থাকায় সংগঠনের সহসভাপতি অধ্যাপিকা ফিরোজা মেরীর সভাপতিত্বে ১৬ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক সম্মেলন ২০১৫ উপলক্ষ্যে জাতীয় সাহিত্য পরিষদ পদক ২০১৫ ও জাতীয় সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা সনদ ২০১৫ প্রদান করেন প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
১৬ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান থাকায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি তাঁর বাণীতে জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর উক্ত অনুষ্ঠানের সফলতা কামনায় প্রদত্ত সমৃদ্ধ বাণীতে বলেন-‘সাহিত্যিক আর সাহিত্যের সমৃদ্ধিই আমাদেও অঙ্গীকার’ এই প্রত্যয়ী শ্লোগানকে সামনে রেখে ১৪ জুলাই ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত জাতীয় সাহিত্য পরিষদের ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক সম্মেলন ২০১৫ উপলক্ষ্যে প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে আগতগত ৬জন কৃতি সাহিত্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে সম্মানিত করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। বাংলাদেশ-ভারতের এই বন্ধুত্ব অমর হোক। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ একই কারণে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান তাঁর প্রদত্ত বাণীতে বলেন- ‘জীবন ও সাহিত্যের সুষমামন্ডিত ও শিল্পিত প্রকাশই সাহিত্য। সৌন্দর্যবৃদ্ধি, মানবিকবোধ ও সৃজনশীলতার সমন্বয়ে গড়ে উঠে একটি দেশের সাহিত্য।
তাই ‘সাহিত্যিক আর সাহিত্যেও সমৃদ্ধিই আমাদেও অঙ্গীকার’ এই প্রত্যয়ী শ্লোগানকে সামনে রেখে ১৪ জুলাই ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক সম্মেলন সফল হোক। জাতীয় সাহিত্য পরিষদেরচলমান কর্মকান্ডে আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সমৃদ্ধি আসুক- এই প্রত্যাশা করি।’
অনুষ্ঠানে প্রায় দুই শতাধিক কবি-সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে জাতীয় সাহিত্য পরিষদ পদক ২০১৫ প্রদান করা হয় ভারতের পশ্চিবঙ্গের কৃতি সাহিত্যিক ড. শ্যামল রায, অরুপ চন্দ্র, ড. সুজাতা বন্দোপাধ্যায় ও বাংলাদেশের জাতিসত্ত্বার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা সহ মোট ১৩ জন কৃতি সাহিত্যিককে এবং জাতীয় সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা সনদ ২০১৫ প্রদান করা হয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃতি সাহিত্যিক দিলিপকুমার মিস্ত্রি, আবদুস সামাদ, আইরিন পারভিন এবং বাংলাদেশের আলী আহমেদ ও সাইদুর রহমানসহ মোট ২৩ জন কৃতি সাহিত্যিককে। ১৬ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর দুই পর্বের এই মহতী অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের শেষ পর্যায়ে ‘সাহিত্যিক আর সাহিত্যের সমৃদ্ধিই আমাদের অঙ্গীকার’ এই প্রত্যয়ী শ্লোগানকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের ড. শ্যামল রায়কে সভাপতি ও আইরিন পারভিনকে সম্পাদক করে বিদেশে জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর প্রথম শাখা জাতীয় সাহিত্য পরিষদ ভারতীয় শাখার প্রাথমিক অনুমোদন ঘোষণা করেন সংগঠনের মহাসচিব সিরাজুল করিম।
এই অনুষ্ঠানে জাতীয় সাহিত্য পরিষদ পদক ২০১৫ প্রাপ্ত গণের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ৩ জন ও বাংলাদেশের ১০ জন সাহিত্যিক।
(০১) ড. শ্যামল রায় (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত), (০২.) অরুপ চন্দ্র (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত),
(০৩) ড, সুজাতা বন্দোপাধ্যায় (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত), (০৪.) প্রফেসর ড. ফজলুল আউয়াল মোল্লা (ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ),
(০৫) কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ), (০৬.) সৈয়দ আরিফ আজাদ ( ঢাকা, ঢাকা বিভাগ),
(০৭) আফতাব চৌধুরী (সিলেট, সিলেট বিভাগ), (০৮) প্রফেসর মোঃ আবদুল করিম (পাবনা, রাজশাহী বিভাগ),
(০৯) ফাতেমা পারভীন (বরগুনা, বরিশাল বিভাগ), (১০) নুরুল আহমেদ (মেহেরপুর, খুলনা বিভাগ),
(১১) কাজী শাহাদাত হোসেন, (১২যোশেফ আখতার ( রংপুর, রংপুর বিভাগ) এবং
(১৩) প্রগতি খীসা (রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম বিভাগ)।
এই মহতী অনুষ্ঠানে জাতীয় সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা সনদ ২০১৫ প্রাপ্ত সাহিত্যিকগণের মধ্যে রয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ৩ জন এবং বাংলাদেশের ২০ জন সাহিত্যিক।
(০১) দিলিপকুমার মিস্ত্রী (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত), (০২) আবদুস সামাদ (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত),
(০৩) আইরিন পারভীন (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত), (০৪) সৈয়দ আবু রায়হান (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ),
(০৫) আলী আহমেদ (ঢাকা, ঢাক্ াবিভাগ), (০৬) সাইদুর রহমান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী বিভাগ),
(০৭) ড. জেবউন নেছা (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ), (০৮) মমতাজ জাহান করিম(ঢাকা, ঢাকা বিভাগ)
(০৯) পারভীন সুলতানা (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ), (১০) মো. নুরুজ্জামান (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ),
(১১) মোঃ আলাউদ্দিন খাঁ (ব্রাহ্মণবাঢ়িয়া, চট্টগ্রাম বিভাগ), (১২) রফিক উদ্দিন ভূইয়া (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ),
(১৩) শাহান আরা জাকির পারুল (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ), (১৪) সুফিয়া বেগম (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ),
(১৫) আইনুন নাহার কাদরী (চাঁদপুর, চট্টগ্রাম বিভাগ), (১৬) বিউটি মারিয়াম (খুলনা, খুলনা বিবাগ),
(১৭) জেবুন নেছা রীনা (ময়মনসিংহ, ঢাকা বিভাগ), (১৮) রফিকুল হক আখন্দ (ঢাকা, ঢাকা বিভাগ),
(১৯) স্বাধীণ চৌধুরী (ময়মনসিংহ, ঢাকা বিভাগ), (২০) আসিফুজ্জামান খন্দকার (ঢাকা, ঢাকা বিবাগ),
(২১) অনন্য আমিনুল (দিনাজপুর, রংপুর বিভাগ), (২২) জসীম মাহমুদ (চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম বিভাগ) এবং
(২৩) ড. মর্জিনা বেগম হাজারী (কুমিল্লা, চট্টগ্রাম বিভাগ)।
১৬ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাহিত্য পরিষদের অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের শেষ পর্যায়ে ‘সাহিত্যিক আর সাহিত্যের সমৃদ্ধিই আমাদের অঙ্গীকার’ এই প্রত্যয়ী শ্লোগানকে সামনে রেখে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ড. শ্যামল রায়, অরুপ চন্দ্র, ড. সুজহাতা বন্দোপাধ্যায়, দিলিপকুমার মিস্ত্রি ও আইরিন পারভিন এবং বাংলাদেশের সৈয়দ আরিফ আজাদ, আফতাব চৌধুরী, আলী আহমেদ ও বিলকিস সুলতানা শিরি। একইসাথে সাংগঠনিক অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন রেহানা সুলতানা, মানসুর মুজাম্মিল, তৌহিদুল ইসলাম কনক, নেছার উদ্দীন আয়উব, মোঃ লুৎফর রহমান, সাবের রাহী এবং ড. জাকিরুল হক সহ ২০ জন নবীন-প্রবীন সাহিত্যিক।
‘সাহিত্যিক আর সাহিত্যের সমৃদ্ধিই আমাদের অঙ্গীকার’ এই প্রত্যয়ী শ্লোগানকে সামনে রেখে ১৬ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ অপরাহ্ন ৩ ঘটিকা থেকে সন্ধ্যা ৭টা অব্দি জাতীয় সাহিত্য পরিষদের ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক সম্মেলনে আফরোজা অদিতির তত্তা¡বধানে শাহান আরা জাকির পারুল. নেসার উদ্দীন আয়উব ও বিলকিস সুলতানা শিরির সঞ্চালনে ডা. এম এ মুক্তাদির ও মোঃ লুৎফর রহমানের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর ৬ষ্ঠ ত্রৈবার্ষিক সম্মেলন ২০১৫ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় পর্বের স্বরচিত কবিতা পাঠ পর্ব। মোঃ নূরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কবিতা পাঠ পর্বের প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসত্ত্বার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। এ পর্বে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কবি ড. শ্যামল রায়, অরুপ চন্দ্র, ড. সুজাতা বন্দোপাধ্যায়, দিলিপকুমার মিস্ত্রি, আইরিন পারভিন এবং বাংলাদেশের জাতিসত্ত্বার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি মানসুর মুজাম্মিল, তৌহিদুল ইসলাম কনক, পারভীন সুলতানা, সাইদুর রহমান, ড. মাযহারুল ইসলাম তরু, ডা. মর্জিনা বেগম হাজারী, জসীম মাহমুদ, বিউটী মারিয়াম, ফাতিমা পারভিন, সাবের রাহী, রফিকুল হক আখন্দ, স্বাধীন চৌধুরী, ড. জেবউন নেছা, জেবুন নেছা রীনা, অনন্য আমিনুল, ফাতেমা মজিদ জুঁই, কেএস মৌসুমী, রেহানা সুলতানাসহ শতাধিক নবীন-প্রবীন কবি। অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশিত জাতীয় সংগীতসহ কবিতা পাঠের ফাঁকে ফাঁকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রথম নারী শিল্পি নমিতা ঘোষের পরিচালনায় সংগীত পরিবেশন করেন মোঃ আহছান উল্লাহ ফরিদ, রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া, ড. জাকিরুল হক, নমিতা ঘোষসহ বেশ কয়েকজন নবীন-প্রবীন শিল্পি। ১৬ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে সুসম্পন্ন জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর ত্রৈবার্ষিক সম্মেলনের সফলতার পিছনে রয়েছে জাতীয় সাহিত্য পরিষদ এর কেন্দ্রীয় ও ৪৩টি জেলা শাখা পর্যায়ের সকল নিবেদিত সাহিত্যিকবৃন্দের মেধা, শ্রম ও আর্থিক সহযোগিতা। তাই আজকের সফলতার কৃতিত্ব কারো একার নয়, জাতীয় সাহিত্য পরিষদের সর্বপর্যায়ের সাহিত্যিকবৃন্দের।

এ জাতীয় আরও খবর