রবিবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০১৮ ইং ১৬ই বৈশাখ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

সন্তানের মা হতে চাই, কিন্তু..

বিনোদন ডেস্ক : মানুষের মতোই বিয়ে করে সংসার পাততে চান পাকিস্তানের অভিনেত্রী মীরা। দেয়াল তুলেছে আইনি প্রক্রিয়া। এদিকে মেঘে মেঘে অনেক বেলা। বয়স গেছে চল্লিশের কোঠায়। বাড়ছে হতাশার ডালপালা।

মীরাকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করে আতিক-উর-রেহমান নামের এক পাকিস্তানি ব্যবসায়ী আদালতে মামলা করেছেন। দেশটির প্রচলিত আইন অনুযায়ী এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মীরা বিয়ে করতে পারবেন না। বিষয়টিতে হতাশ এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বিয়ে করতে চাই। সন্তানের মা হতে চাই। সময় চলে যাচ্ছে, কিন্তু…। এভাবে আদালতে লড়তে লড়তে আমি ক্লান্ত। আমার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’

মীরা নিজেকে অবিবাহিত প্রমাণ করতে গত সাত বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। জনপ্রিয় ও সফল এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে আতিক অভিযোগ এনেছেন—মীরার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল; কিন্তু মীরা তা গোপন রেখে নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে যাচ্ছেন।

বিবিসি অনলাইনের খবরে আজ বুধবার বলা হয়েছে, পাকিস্তানের চলচ্চিত্র জগতের পরিচিত মুখ মীরা। দেশের গণ্ডি পার করে বলিউডেও অভিনয় করেছেন ৪০ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী। রাজনীতিতে নামার ইচ্ছা আছে তাঁর। মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ সক্রিয়। নিত্য-নতুন নিজের নানা ঢঙের ভিডিও প্রকাশ করে আলোচনায় থাকেন তিনি।

২০০৯ সালে আতিক-উর-রেহমান নামে ফয়সালাবাদের এক ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের বলেন, গোপনীয় আয়োজনের মাধ্যমে ২০০৭ সালে তিনি ও মীরা বিয়ে করেন। মীরা বিয়ের খবর প্রকাশ করতে চাননি। আর সবাইকে বলে বেড়াচ্ছেন তিনি অবিবাহিত। বিষয়টি নিয়ে তিনি মনঃকষ্টে ভুগছেন। এরপর তিনি মীরার বিরুদ্ধে কয়েকটি আদালতে মামলা করেন। প্রমাণ হিসেবে তিনি বিয়ের ‘কাবিননামা’ হাজির করেন। দাবি করেন স্ত্রীর মেডিকেল পরীক্ষা করার ও যেখানে তাঁরা থাকতেন সেটি দেখার।

বিবিসিকে মীরার আইনজীবী বালাক শের খোসা বলেন, মীরার মেডিকেল পরীক্ষার যে আবেদন আতিক-উর-রেহমান করেছিলেন সেটি লাহোর হাইকোর্ট পরে খারিজ করে দেয়।

২০১০ সালে আতিক-উর-রেহমানের দাখিল করা ‘কাবিননামা’ চ্যালেঞ্জ করে মীরা পাল্টা মামলা করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, তিনি কাউকে বিয়ে করেননি। আলোচনায় আসার জন্য আতিক-উর-রেহমান নামের ব্যক্তিটি এসব করছেন।

মীরা না আতিক—কার কথা বিশ্বাসযোগ্য? মীরা বলছেন, ‘এক বন্ধুর মাধ্যমে আতিকের সঙ্গে আমার পরিচয়। কয়েকটি কনসার্ট ও আয়োজনে আতিক উদ্যোক্তা ছিলেন। পরে কিছু ভুয়া ছবি হাজির করে তিনি দাবি করেন, আমরা বিবাহিত। তিনি কীভাবে আমাকে তাঁর স্ত্রী দাবি করেন?’ তাঁর কথা, ‘আমি তারকা। আমি কেন ঘরোয়াভাবে এমন একজনকে বিয়ে করব?’

আতিক-উর-রেহমানের আইনজীবী আলী বোখারি বিবিসিকে বলেন, ‘আমার মক্কেল মীরার মা ও চাচার উপস্থিতিতে তাঁকে বিয়ে করেছেন। মীরার উচিত, আতিককে স্বামী হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া।’

পাকিস্তানে বিয়ের ভুয়া নিবন্ধনপত্র বের করা কোনো বিষয়ই না। আবার তারকাদের মধ্যেও বিয়ে গোপন করার প্রবণতা আছে, বিশেষ করে অভিনেত্রীদের মধ্যে। তাঁরা মনে করেন, বিয়ে তাঁর ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কমে যেতে পারে দর্শক চাহিদা। তারকাখ্যাতি কমে যাওয়ার আশঙ্কা তাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। তবে মীরার ক্ষেত্রে কী ঘটেছে, তা নির্ধারণ করতে পারবে কেবল আদালতই।

Print Friendly, PDF & Email