সোমবার, ১৮ই জুন, ২০১৮ ইং ৪ঠা আষাঢ়, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

‘অটুট থাকবে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক’

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের বন্ধুত্ব কোন ঠুনকো বিষয় নয়, আমাদের সৌহার্দ্য, ভাতৃত্ব কোন গোজামিলের নয়। এটা রক্তের বন্ধনে লেখা, তাই এই বন্ধন চির অটুট থাকবে। একথা বলেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জনাব আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক।

শুক্রবার কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ‘বাংলাদেশ বিজয় উৎসব ২০১৭’এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করে মন্ত্রী বলেন ‘একজন ব্যক্তি তার স্ত্রী বা স্বামী বদল করতে পারেন কিন্তু প্রতিবেশি কখনও বদল করা যায় না। আমাদের তিন দিকেই ভারত, একদিকে বঙ্গোপসাগর। তাই আমাদের প্রতিবেশি বদলানোর কোন সুযোগ নেই। প্রতিবেশির সঙ্গে বন্ধুত্ব, সৌহার্দ্য এবং সমমর্যাদা দিয়ে চলাটাই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি।

মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন ‘ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ভারত সরকার সেসময় আমাদের বুকে টেনে নিয়েছিল, এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল, আমাদের অস্ত্র, প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, তারপর আমরা গেলিয়া যুদ্ধ শুরু করি। যদি ভারতবাসী আমাদের আশ্রয় না দিতেন তবে নয় মাস কেন, নয় বছরেও এই স্বাধীনতা আসতো না। ভারত শুধু আশ্রয়ই দেয়নি, যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের সৈন্যরাও আমাদের সাথে প্রণ দিয়েছে। এই বন্ধু পরিক্ষীত, অত্যন্ত শক্তিশালী।

আমাদের সৌহার্দ্য ভাতৃত্ব কোন গোজামিলের নয়, এটা রক্তের বন্ধনে লেখা, এই বন্ধুত্ব কখনওই নষ্ট হওয়ার নয়’। বিরোধীদল বিএনপিকে কাগুজে বাঘ বলে অভিহীত করে মন্ত্রী বলেন, তাদের আওয়াজ অনেক বেশি, তাদের যদি সমর্থন থাকতো তবে নির্বাচনের ময়দান থেকে পালিয়ে যেতো না। এবছরও তারা নির্বাচনের ময়দানে থাকবে কি না তা নিয়ে তাল বাহনা করছে। মন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করে দেন যে ‘সংবিধানের বাইরে কোন কিছুই হবে না। আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে, নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। কে আসল কে গেল, কে গেল না তার জন্য বাঙালি জাতি অপেক্ষা করবে না।

২০০৮ সালে বাংলা মানুষ তাদের (বিএনপি) একবার উপড়ে ফেলেছে, সেবার তারা ৩০ টি আসনও পায় নি। আবার যদি তারা নির্বাচনে আসে বাংলার মানুষ ব্যালটের মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক ভাবে উপড়ে ফেলে কবর রচনা করবে’।

আরও : বাংলাদেশের উপকূলে আসতে থাকা জ্বলন্ত জাহাজ আটকে দিলো ভারত

তিনি বলেন, ভারতের মধ্যে বিশেষ করে কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক জায়গায় যেখানে মুজিব নগর সরকার ছিল, আমাদের শত শত মুক্তিযোদ্ধাদের কবর দেওয়া আছে, পাশাপাশি ত্রিপুরাতেও অনেক ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে সেগুলিকে যৌথ ভাবে সংরক্ষণের বিষয়ে কূটনৈতিক ভাবে আলোচনা চলছে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার থেকেই কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের উদ্যোগে মিশন প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, উপস্থিত ছিলেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক মানস ঘোষসহ বিশিষ্টরা।

এদিনের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ’এর ভাষণ সম্প্রচারিত করা হয়। মঞ্চের পাশেই বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শণী ঘুরে দেখেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীরা। যদিও ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে মাত্র দশ মিনিট পরেই অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত মানষ ঘোষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়ষী প্রশংসা করে বলেন যেভাবে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে কানেকটিভিটি বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেতু, বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বর্য়সম্পূর্ণ হয়ে উঠছে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। যদিও সেদেশে মৌলবাদী শক্তির উত্থানে আশঙ্কা প্রকাশ করে এব্যাপারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শক্ত হাতে মোকাবিলার কথা বলেছেন তিনি।

এই উৎসবের সমাপনী আগামী ১৯ ডিসেম্বর। এই উৎসবে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোকচিত্র, তথ্যচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি থাকছে আবৃত্তি, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন বাংলাদেশের এস.ডি.রুবেল, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কুমার বিশ্বজিৎ, মমতাজ বেগম, ফাহিম হোসেন’এর মতো সঙ্গীতশিল্পীরা, থাকবে বাংলাদেশের ব্যান্ড দল ‘জলের গান’। অন্যদিকে ভারতের খ্যাতনামা শিল্পীদের মধ্যে থাকবেন হৈমন্তী শুক্লা, শ্রীকান্ত আচার্য, কবীর সুমন, সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু মাইতি প্রমুখ।

উৎসবের আকর্ষণ বাড়াতে থাকছে ঢাকাই জামদানি, রাজশাহী সিল্ক, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি, হস্তশিল্প, বুটিক সিরামিক ও মেলামাইন সামগ্রিক, বই সহ বিবিধ বাংলাদেশি পণ্যের প্রদর্শণী। প্রতিদিন বেলা বিকাল ৩ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত চলবে এই মেলা।

Print Friendly, PDF & Email

এ জাতীয় আরও খবর

বাংলাদেশের উপকূলে আসতে থাকা জ্বলন্ত জাহাজ আটকে দিলো ভারত

‘বাড়ি গেলে সৎ বাবা মারে’

ফেবারিটদের কী হলো?

হিজরা দলের অভিনব কায়দায় ছিনতাই

ঈদের আনন্দ এখন একটু কম, সবাইকে শুধু দিতেই হয়: চম্পা

ক্রিকেটারদের ঈদ কেমন কাটছে?