সোমবার, ২১শে মে, ২০১৮ ইং ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর খনন শুরু

বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উপর দিয়ে বয়ে চলা তিতাস নদীর খনন কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে নদী খননের খবরে তিতাস পারের সাধারণ বাসিন্দারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। গত শনিবার সকালে এ নদী খনন কাজের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা জানান, এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের মানুষের প্রাণের উৎস ছিল খরস্রোতা তিতাস নদী। এই নদীকে ঘিরে একসময় তৈরি হয়েছিল অসংখ্য ছোটবড় হাটবাজার। কিন্তু কালের গর্ভে তিতাস নদী তার নাব্যতা হারিয়ে মরা নদীতে পরিণত হতে চলছিল। ভরা বর্ষা মৌসুমেও তিতাস প্রাণ ফিরে পায়নি।

গোকর্ণ ঘাট এলাকার তিতাস পারের বাসিন্দা শাহজান মিয়া, কৃষক সিরাজ মিয়া ও হরিধন জলদাস বলেন, নদী খননের খবরে আমরা খুব খুশি।  তিতাসকে কেন্দ্র করে আমাদের যে ফসলি জমি রয়েছে তা রক্ষা পাবে। শুষ্ক মৌসুমে সেচ দিতে পারবো। এছাড়াও বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে মাছ ধরতে পারবো। পণ্য নিয়ে এক বাজার থেকে অন্য বাজারে যেতে পারবো। এর চেয়ে সুখের খবর আর কি হতে পারে?

নদী খনন নিয়ে প্রধান অতিথি  র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, ‘তিতাসের খনন কাজ শেষ হলে নদীটি তার আপন প্রাণ ফিরে পাবে, বর্ষা মৌসুমে শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্র্য রক্ষা হবে। কৃষি ও মৎস্য খ্যাতে উৎপাদন বাড়বে, নৌ-যোগাযোগের পথও সুগম হবে। তিতাস খননের দাবিটি ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর প্রাণের দাবি।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্রশীল জানান, প্রকল্পের নির্দেশনা অনুযায়ী ৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য তিতাস নদী এবং এর শাখা নদীর সাড়ে ৯ কিলোমিটার পাগলানদী এবং সোয়া ৩ কিলোমিটার করুলিয়া খালসহ ১শ’ ৩ কিলোমিটার নদী খননে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৯ কোটি টাকা।

নদী খননের কাজটি বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। খনন কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী নারায়ণগঞ্জ বন্দর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের সদস্যরা। আগামী ২০২০ সালের জুন মাসে নদীটি খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email