বৃহস্পতিবার, ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ইং ৩রা ফাল্গুন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

দুধ খেতে মানা? আছে সমাধান

স্বাস্থ্য ডেস্ক : নতুন নতুন খাবারের স্বাদ নিতে কার না ভালো লাগে। এ কারণেই বাড়িতে নয়া রেসিপি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন অনেকেই। আবার বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ছুটে যান সবাই। যেসব রেস্টুরেন্টে খাবার নিয়ে পরীক্ষামূলক রেসিপি বানানো হয়, সেখানেও সবাই চলে যান একবেলা খাবারের স্বাদ নিতে। তবে এখানে এমন একটি খবার নিয়ে আলোচনা হবে যেটা কিনা কোলের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধের কাছে বেশ প্রিয় এবং জরুরিও বটে।

দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য, যেমন পনির, মাখন, দই, মিষ্টি ইত্যাদি বেশ পুষ্টিকর হয়ে থাকে। গোটা বিশ্বজুড়ে দুধ এক জনপ্রিয় পানীয়। তবে নানা গবেষণায় দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যকে অনেক ক্ষেত্রেই অস্বাস্থ্যকর খাবার বলে তুলে ধরা হয়। তাই অনেককেই দুধ খেতে মানা করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এর প্রয়োজও তো আছে। অনেক মানুষই আছেন যারা দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার খেলে শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়। তাদের করণীয় কী?

এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন পুরস্কারপ্রাপ্ত সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ রাইয়ান ফার্নান্দো। তিনি ভারতের বিখ্যাত কুয়া নিউইট্রিশন সিগনেচার ক্লিনিকস এর প্রধান পুষ্টিবিদ। এখানে কর্মরত আছেন গোটা ভারতের সেরা ৫০ পুষ্টিবিজ্ঞানী। এখানে খাবারের মাধ্যমে রোগ সারাই করা হয়। যাদের দুধে সমস্যা আছে তাদের বিষয়ে কথা বলেছেন রাইয়ান।

তিনি বলেন, আসলে পুষ্টিবিদ হিসেবে আমাকে দীর্ঘ বছর ধরে মানুষের দেহ নিয়ে গবেষণা করতে হয়েছে। একেক মানুষের দেহের ভেতরের কার্যক্রমে পার্থক্য রয়েছে। কাজেই খাবারের প্রভাবে ভিন্নতা দেখা দেবে। আমি নিজের ক্ষেত্রেও ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝেছি, আমার দেহ ল্যাকটোজ সহ্য করে না। আর ল্যাকটোজ হলো দুধের শর্করা উপাদান। কারো দুধ খেতে মানার অর্থ হলো তার দেহে ল্যাকটোজ পড়লেই সমস্যা শুরু হয়।

ল্যাকটোজ কী?
এটি এক ধরনের চিনি যা সাধারণত দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে থাকে। ল্যাকটেজ নামের এক ধরনের পাচক রস ব্যবহার করে মানবদেহ এই চিনি হজম করে। যাদের দেহে যথেষ্ট ল্যাকটেজ নেই তাদের দেহেই দুধ সমস্যা সৃষ্টি করে। দুধ খেলেই তাদের বমি বোধ হয়। অস্বস্তি লাগে, দুধকে শরীর হজম করতে পারে না।

এমন অসংখ্য মানুষ আছেন যাদের দেহ ল্যাকটোজ সহ্য করতে পারে না। তাই বলে দুধের স্বাদ না নিয়ে কত দিন কাটানো যায়? তাদের প্রথমে প্রোবায়োটিকে মন দিতে হবে। এগুলো উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা পেটের নানা সমস্যা দূর করতে কাজ করে। দেহে এসব ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। এর জন্যে দই বা দইয়ের মতো খাবার শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ। এই সুস্বাদু খাবারটি সত্যিকার অর্থেই আপনার দেহে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার আনাগোনা ঘটাতে পারে। এতে হজমের সমস্যা অনেকটাই দূর হবে। এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার দুটো নতুন নাম পেয়েছে। একটি ল্যাকটোবেসিলাস অ্যাসিডোফিলাস, আরেকটি বিফিডোব্যাকটেরিয়াম ল্যাকটিস। এদের মধ্যে প্রথমটি ল্যাকটোজ হজমের জন্যে শক্তি প্রদান করে পাকস্থলীকে।

তাই যাদের দুধ খাওয়া নিষেধ বা দুধ খেলেই সমস্যায় পড়েন, তারা প্রোবায়োটি গ্রহণ করতে পারেন। ভালো ব্যাকটেরিয়া পেটে থাকলে দুধ খেতে আর কোনো সমস্যা হবে না।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

Print Friendly, PDF & Email