শনিবার, ২রা জুন, ২০১৮ ইং ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

নাসিরনগরে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর উপজেলায় বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয় না।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১২৬টি সরকারি প্রাথমিক, একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুটি স্কুল এন্ড কলেজ ও দুইটি কলেজসহ ছয়টি আলিয়া মাদ্রাসা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ২৪টি কিন্ডারগার্টেন। রকস প্রকল্পের আওতাধীন প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭৬টি। এর মধ্যে শুধুমাত্র চারটি কলেজ ও পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। এছাড়া উপজেলার বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শহীন মিনার নেই। এমনকি উপজেলার ২৪টি কিন্ডার গার্টেনের একটিতেও কোনো শহীদ মিনার নেই।

রোববার উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার নাসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লাহাজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নরহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। এছাড়া উপজেলা শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান নাসিরনগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই স্কুল প্রতিষ্ঠা লংগ্ন হতে।

বুড়িশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ে পাঁচ শতাধিকের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতি বছর শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটি পালন করে। এছাড়া সকালে পতাকা উত্তোলন, আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।

ফান্দাউক ঋষিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাকমিনা আক্তার, সাদিয়া রহমান ও উম্মে হানি বলে, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন ইশকুল বন্ধ থাকে। স্যারেরা কলাগাছ দিয়া শহীদ মিনার বানায়। আমরা সকালে ওইঠ্যা ফুল দেয়।

ফান্দাউক ঋষিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্চয় কুমার দেব বলেন, বিদ্যালয়ে দুই শতাধিকের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। পতাকা স্ট্যান্ডের পাশে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা হয়। সেখানে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ফুল দেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন,আমরা চেষ্ঠা করছি স্থানীয় জনগনকে উৎসাহে প্রদান করে ও জনপ্রতিনিধিদের সম্প্রীক্ত করে প্রতিটি স্কুলে একটি করে শহীদ মিনার তৈরি করতে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাকসুদুর রহমান বলেন, আমি এখানে অল্প কিছুদিন হল যোগদান করেছি।
মেয়েদের একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। বিষয়টি শুনেছি। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের জন্য আবেদন করেছে কি না তাও জানি না। সরকার অর্থ বরাদ্দ দিলে অবশ্যই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। তিনি জানান, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত।
Print Friendly, PDF & Email