মঙ্গলবার, ২৯শে মে, ২০১৮ ইং ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরের বিশাল কবুতর হাটের কথা

ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর  : রোববার আসলেই হাট বসে।সে-ই শত বর্ষ আগে থেকেই এদত অঞ্চলের মানুষ হাটটিকে ঘিরে ব্যবসায়িক লেনদেন চলে। ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলার মওলাগঞ্জ বাজার (বড় বাজার বলে ব্যাপক পরিচিত) এই বাজারের এই হাটটির সুখ্যাতি বৃহত্তর কুমিল্লা জুড়ে।

তবে,বিগত ১২/১৩ বছর ধরে রবিবারের হাটে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এই বড়বাজারের বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে পরিচালিত সোবহানিয়া আলীম মাদ্রাসার মূল গেইট ধরে ক্যা.তাজুল ইসলাম অডিটোরিয়াম পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে বেচা-কেনার জন্য অপেক্ষা করে শত-শত কবুতর।হাজারো পন্যসামগ্রী এই বৃহত সাপ্তাহিক হাটে সদাই হলেও,কবুতর বাজারটি সুখ্যাতি কুড়িয়েছে যুগ ধরে।

এখানে পাশর্^বর্তী নারায়নগঞ্জ, সাভার,ঢাকার কাপ্তান বাজার, নরসিংদী, মধাবদী, গোপালদী, মুরাদনগর, নবীনগর, ব্রাহ্মনবাড়িয়া,আখাউড়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকার ও ক্রেতারা আসেন নানান প্রজাতির কবুতর কিনতে বা বেচতে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য দেয়া হয় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা,আর্থিক গ্যারান্টি,থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন হাটের ইজারাদার।জানা গেছে,এই হাটে ৮’শ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন মূল্যের একজোড়া কবুতর বিক্রি হচ্ছে।জাত,রং,বয়স ইত্যাতির উপর নির্ভর করে দাম ঠিক করা হয়।

আজকাল বেকারত্ব ঘুচাতে অনেকেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতরের খামার স্থাপন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।ব্রয়লার মুরগী,কোয়েল পাখি,গরু-ছাগলের চেয়ে কমপুজিতে কবুতর পালন করে এলাকায় বহু ছেলে আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে জানান, বাঞ্ছারামপুর কবুতর এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক বিজয় কুমার দেব ভূট্রো।

কবুতর হাট ঘুরে দেখা গেছে, ম্যাগপাই, বুডারবল, কৃষ্ণা, লক্ষ্যা, জগভিন, নান, বাগদাদী, রেইন, লালসিরাজী, সিলভার সিরাজী, জেকভিন, সাটিং, গ্রীবাজ, হোমাসহ নানা রং আর জাতের মূল্যবান কবুতর কেনা-বেচায় রবিবারের কবুতরের হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের।আর লেনদেন হয় বেশ কয়েক লাখ টাকার।

নরসিংদীর মধাবদী হতে আসা কবুতর পাইকার মো.ফরহাদ মিয়া আজ রবিবার দুপুরে হাটে কথা বললে তিনি হাট প্রসঙ্গে জানান,-‘বাঞ্ছারামপুরের এই কবুতর হাটে এসে অন্যান্য হাটের চেয়ে অনেক শান্তি।এখানে মাস্তানী,কবুতর জোর করে কেড়ে নেওয়া, কমদামে বিক্রি করতে বাধ্য করা এসব নেই বলে আমি দশ বছর ধরে হাটটিতে আসছি’।

কবুতর এসোয়িশেনের সভাপতি সভাপতি মো.খলিলুর রহমান বলেন, আমি নিজেই আজ এখান থেকে ১৭ হাজার টাকায় ৮ জোড়া কবুতর কিনলাম।সেই তুলনায় খাজনা দিলাম মাত্র ২’শত টাকা।অন্যান্যস্থানের চেয়ে খাজনা কম বলে ক্রেতা বিক্রেতারা এখানে ভীড় করেন। সে সাথে বাহারী ডিজাইনের,রং,নাম,প্রজাতির কবুতর এখানে পাওয়া যায়’।

কবুতর পালনের সুবিধা কম বিনিয়োগে কবুতর পালন অত্যন্ত সহজ এবং এদের প্রজননকাল সংক্ষিপ্ত। রোগ বালাই কম। মাংস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের উৎস।

Print Friendly, PDF & Email