বুধবার, ২৩শে মে, ২০১৮ ইং ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

সেবার মানসিকতা নিয়ে রাজনীতিতে এসেছি: দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পেশাগত ব্যস্ততা সত্ত্বেও সেবার মানসিকতার কারণে রাজনীতিতে আসার কথা জানিয়েছেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান দোলন।

রবিবার সকালে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালীর সৈয়দ আমির আলী মিলনায়তনে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্য চশমা বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের এই মনোনয়নপ্রত্যাশী।

কর্মসূচির আয়োজন করে সমাজসেবামূলক সংস্থা কাঞ্চন মুন্সি ফাউন্ডেশন। গত ২৯ এপ্রিল মধুখালীর কামারখালীতে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চক্ষু ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। ওই ক্যাম্প থেকে ১০১ জনকে চশমা দেয়ার জন্য বাছাই করা হয়। এছাড়া ৩০ জনের চোখের ছানি অপসারণ ও লেন্স সংযোজন করা হয়।

ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান দোলন বলেন, ‘আজ যারা আপনারা আজ এখানে উপস্থিত হয়ে চশমা নেবেন তাদের প্রতি আমাদের কাঞ্চন মুন্সি ফাউন্ডেশনের সেবার দরজা খোলা আছে।’

‘আমরা গতকাল বোয়ালমারীতে যারা দৃষ্টিশক্তিহীন তাদের অপারেশন করিয়েছি। তারা দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন। আমরা ৩০ জনের চোখ অপারেশন করিয়েছি। ২৬ তারিখে বোয়ালমারীতে আরো একটি চক্ষু ক্যাম্প করব। আরেকটা ক্যাম্প ২৮ তারিখ আলফাডাঙ্গায় হবে।’

‘আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে জেনেছি আলফাডাঙ্গায়, বোয়ালমারী ও এবং মধুখালীতে ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চক্ষু রোগী এসব এলাকায়।’

ফরিদপুর জেলা পরিষদের সদস্য সদস্য শেখ শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় চশমা বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি একরাম হোসেন তপন।

দোলন বলেন, ‘কাঞ্চন মুন্সি ফাউন্ডেশন এই অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং দারিদ্র বিমোচনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে। আমি এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হিসেবে মনে করি এই প্রতিষ্ঠান শুধু এই অঞ্চল নয় সারা দেশের সেবা করুক।’

‘যিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী তার শাসক হওয়ার কথা কিন্তু তিনি নিজেকে সেবক বলে মনে করেছেন। এমন একজন নেত্রী, সহযোদ্ধা, সহকর্মী প্রধানমন্ত্রী পেয়ে আমরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করি। তার মত সেবার মানসিকতা নিয়ে আপনাদের মাঝে থাকতে চাই। সেবার মানসিকতা নিয়ে বারবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে চাই।’

আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মানুষের সেবার ব্রত নিয়ে কাজ করছেন। শেখ হাসিনা যদি আগামীতে আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তাহলে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া আরও সহজ হবে।’

কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরির পেছনে বর্তমান সরকারের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে দোলন বলেন, ‘ক্লিনিকগুলো আওয়ামী লীগ সরকার করেছে। ক্লিনিকগুলোকে আরো বেশি করে কীভাবে সক্রিয় করা যায় এবং বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালকে আরও উন্নত করার অঙ্গীকার রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। তাকে এই কাজটা করার জন্য আমাদের সুযোগ দিতে হবে।’

তরুণ এই রাজনীতিক বলেন, ‘যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন তারা কিন্তু জনগণের মনিব নন, তারা হচ্ছেন জনগণের সেবক। এই মানসিকতা যদি তাদের না থাকে তবে সাধারণ মানুষ তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের সেবা পাবেন না। নেতা যদি সেবা না দেন তবে তার কাছ থেকে সেবা আদায় করে নিতে হবে। কীভাবে আদায় করে নেবেন সেটি নিশ্চয়ই আমার চেয়ে ভালো জানেন।’

মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে দোলন বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে আমরা আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছি। তেমনি করে আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে আমাদের আধিকার অর্জন করে নিতে পারব।’

‘আজ এখানে যারা উপস্থিত আছেন তাদের মধ্যে যারা বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত, সমাজে যারা পিছিয়ে পড়া শ্রেণি আমি তাদেরকে নিয়ে আরো বেশি করে কাজ করতে চাই। এই অঞ্চলের মেহনতি মানুষ যারা তাদেরকে সমাজের প্রথম কাতারে কীভাবে নিয়ে আসা যায় সেজন্য কাঞ্জন মুন্সি ফাউন্ডেশন কাজ করতে চায়।’

‘আপনারা দয়া করে সহযোগিতা করবেন। কোনোভাবেই একার পক্ষে ভালো কাজ করা সম্ভব নয়। দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ।’

‘আমি এই অঙ্গীকার করছি অনেকেই হয়তো বলেন, কেউ কেউ হয়তো বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চাই এটাই বুঝি আমার মূল চাওয়া। কিন্তু না, আমি অসহায়, নিপীড়িত মানুষের সেবায় আজীবন নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই। এই হচ্ছে আমার এক এবং একমাত্র চাওয়া।’

‘আপনার যদি আমাকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে দেখতে চান তবে আমি রাজি আছি। একজন সংসদ সদস্য হলে অবশ্যই বেশি করে মানুষের সেবা করা যাবে। কিন্তু যারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েছে সরকারের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা পেয়েছে আপনাদের সেবা করেন না তাদেরকে জবাবদিহি করা উচিত।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কামারখালী কিন্ডার গার্টেনের প্রধান শিক্ষক শিশির চৌধুরী, মেকচামী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি একরাম হোসেন তপন, বিশিষ্ট সমাজসেবক মাছুদ হোসেন মিয়া, বাগাটবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন খান লাল, কামারখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শাহাদত হোসেন সাবু এবং মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শাহাদত হোসেন প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email