বৃহস্পতিবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১২ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়  মালটা ও কমলার বাণিজ্যিক চাষে লাভবান কৃষক

তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মালটা ও কমলার বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে। চলতি বছর ব্যাপক হারে এই দুই ফলের ভালো ফলন আশা করা হচ্ছে ব্যাণির্জিক ভাবে চাষ করা কৃষকরা ।আর  ফলন অনুযায়ী লাভের হার কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় কৃষক মালটা ও কমলা চাষে ঝুঁকবেন এবার।
এর ফলে সরকারের কৃষি বিভাগের ‘সাইট্রাস ভিলেজ প্রজেক্ট’ এ আওতায় মালটা, কমলাসহ জাম্বুরা ও লেবু চাষ হচ্ছে বিজয়নগরে সবচেয়ে বেশি। কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ উপজেলায় ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে এসব ফলের চাষ করা হয়। এর ৯০ শতাংশই মালটা।এখানে  প্রায় ৩৫ হাজার চারা রোপণ করা হয় মালটা ফলের।স্হানীয়ভাবে  কৃষক অধিদপ্তর  সরকারিভাবেই কৃষকদের মাঝে এসব চারা বিতরণ করেন। এ প্রজক্টে মোট বাগান রয়েছে ১২০থেকে ১৫০ টির মতো। এছাড়া বিভিন্ন বাড়িতেও চারা রোপণ করা হয়।
প্রায়ই  বাগানে ভালো ফলন হয়েছে। বাকিগুলোতেই আগামী বছর ফলন হবে বলে আশা করছে কৃষকরা।কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এখানে বারি-১ মালটা ও কমলা, ডোরাকাটা মালটা, নাগপুরি কমলা, বাতাবি লেবু, কলম্বো লেবু ও জারা লেবু চাষ হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর, পাহাড়পুর ও চম্পকনগর ইউনিয়নের প্রায় বিভিন্ন বাগানে মালটা, কমলাসহ অন্যান্য ফলন হয়েছে। দুই তিন বছর বয়সি মালটা গাছের কোন কোনটিতে ১৮০/২০০ এর বেশি মালটা ধরেছে। কমলার ফলনও ভাল হয়েছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে বাগানের উৎপাদিত  মালটা খাওয়ার উপযোগি হয়ে উঠবে বলে শতভাগ। ইতিমধ্যেই মালটা কেনার জন্য পাইকারি ক্রেতারা দেশের বিভিন্ন স্হান থেকে এসে অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনতে চাইছে  বাগানে বাগানে ঘুরে এরকমটি জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে কমলা খাওয়ার উপযোগী হতে আরো কিছু সময় লাগবে।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয়, নোয়াবাদী চাষী মো. ইসহাক, বিষ্ণপুরের শিব্বির আহমেদ সরকার ও মেরাসারিন সোহাগ ভূঁইয়ার সঙ্গে তারা  জানান, ৬২ শতাংশ জমিতে মালটা, কমলা, জাম্বুরা ও লেবুর চাষ করেছেন। আগে ওই জমিতে বেগুনের চাষ করতেন। দীর্ঘ মেয়াদি ফলন পাওয়ার আশায় ও কম শ্রম দিতে অধিক লাভের আশায় এসব ফলের চাষ করছেন তারা । তারা এও বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের লোকজন এসব চাষে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেন। ট্রেনিংও করান। এখন বাগানের ফলন দেখে আমরা খুব আশাবাদী।
কথা হয়, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. হাদিউল ইসলাম ভূঁইয়া সৃজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে কৃষকদেরকে মালটা ও কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ করি। প্রতিনিয়তই খোঁজ রাখছি। এখন কৃষকরাই বলছেন তাঁরা খুশি। অনেকেই এখন মালটা ও কমলা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মশকর আলী বলেন, ‘মালটা বছরে দুইবার ফলন হয়। এটি লাভজনক ফল। আমার কাছে মনে হচ্ছে বিজয়নগরের লিচু, কাঁঠালের উৎপাদনের চেয়ে মালটা চাষ আরো বেশি ভালো হবে। এছাড়া কমলা, জাম্বুরা ও লেবুর ফলনও ভালো হবে বলে আশা করছি।’