শুক্রবার, ২৭শে জুলাই, ২০১৮ ইং ১২ই শ্রাবণ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

সকল সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ যাকে ডাকবেন

রাগ মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। মনের পরিপন্থী হলেই মানুষ রেগে যায়। এ স্বভাব দিয়েই মানুষ সৃষ্টি। কিন্তু যারা রাগ নিয়ন্ত্রণ করবে তাদের জন্য রয়েছে বিরাট মর্যাদা। এটি একটি পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য বার্তা এসেছে। নিম্নে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হলো।

সাহল ইবনু মু‘আয (রা.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার রাগ প্রয়োগে ক্ষমতা থাকার সত্ত্বেও সংযত থাকে, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাকে সকল সৃষ্টিকূলের মধ্যে থেকে ডেকে নিবেন এবং তাকে হুরদের মধ্য থেকে তার পছন্দমত যে কোনো একজনকে বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দিবেন। আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৭৭৭

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জনৈক সাহাবীর পুত্র থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ। অতঃপর আখিরাতে আল্লাহ তাকে ডাকবেন এর স্থানে বলেনঃ আল্লাহ তাকে শান্তি ও ঈমানের দ্বারা পরিপূর্ণ করবেন।

তারপর বলেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সৌন্দর্যবর্ধক পোশাক পরা থেকে বিরত থাকে এবং বর্ণনাকারী বিশর বলেন, আমার ধারণা তিনি নম্রতা পরিত্যাগের কথা বলেছেন, আল্লাহ তাকে সম্মানের পোশাক পরিধান করাবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিবাহ করবে আল্লাহ তাকে রাজমুকুট পরিধান করাবেন। আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৭৭৮ তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, আহমাদ।
আব্দুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের মধ্যকার কোন ব্যক্তিকে তোমরা বড় বীর মনে করো? সাহাবীগণ বললেন, যাকে কেউ যুদ্ধে হারাতে পারে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ না, বরং প্রকৃত বীর হলো সেই ব্যক্তি যে রাগের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে। আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৭৭৯,মুসলিম।

ক্রোধের সময় যা বলতে হয়
মু‘আয ইবনু জাবাল (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে পরস্পরকে গালি দিতে লাগলো। তাদের একজন এতটা রাগান্বিত হলো যে, মনে হচ্ছিল, রাগের প্রচন্ডতায় তার নাক ফেটে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি এমন একটি বাক্য জানি যা বললে রাগের প্রতিক্রিয়া চলে যাবে।

তখন মু‘আয (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তা কি? তিনি বললেন, সে বলবেঃ ‘‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় চাইছি।’’ আব্দুর রাহমান বলেন, তখন মু‘আয (রা.) তাকে তা পড়ার তাকীদ দিতে থাকলেন। কিন্তু সে তা পড়তে সম্মত হলো না এবং ঝগড়া করতে থাকলো এবং তার রাগ আরো বৃদ্ধি পেলো। আবু দাউদ, হা নং ৪৭৮০। তিরমিযী, আহমাদ।

সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে দু’ ব্যক্তি পরস্পরকে গালি দিতে লাগলো। তখন তাদের একজনের চোখ লাল হতে থাকে ও ঘাড়ের রগ মোটা হতে থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি অবশ্যই এমন একটি বাক্য জানি এ ব্যক্তি তা বললে নিশ্চয়ই তার রাগ চলে যাবে। তা হলোঃ অভিশপ্ত শয়তান থেকে আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইছি। লোকটি বললো, আপনি কি আমার পাগল ভাব দেখছেন! । আবু দাউদ, হা নং ৪৭৮১,বুখারী, মুসলিম।

আবূ যার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো যদি দাঁড়ানো অবস্থায় রাগের উদ্রেক হয় তাহলে সে যেন বসে পড়ে। এতে যদি তার রাগ দূর হয় তো ভালো, অন্যথায় সে যেন শুয়ে পড়ে। আবু দাউদ, হা নং ৪৭৮২,আহমাদ।

আবূ যার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো যদি দাঁড়ানো অবস্থায় রাগের উদ্রেক হয় তাহলে সে যেন বসে পড়ে। এতে যদি তার রাগ দূর হয় তো ভালো, অন্যথায় সে যেন শুয়ে পড়ে। আবু দাউদ, হা নং ৪৭৮২,আহমাদ।