বৃহস্পতিবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১২ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

লাখো মুসল্লির পদচারণায় মুখর মিনা, আজ হজ

ইসলাম ডেস্ক: সারাবিশ্ব থেকে সৌদি আরবে সমবেত ২০ লাখের বেশি মুসলমানের মিনায় অবস্থান নেয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হজ পালনের আনুষ্ঠানিকতা। সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজিরা দিতে আসা এই মুসলমানরা আজ সোমবার জড়ো হবেন আরাফাতের ময়দানে, যাকে হজের মূল অনুষ্ঠান বলা হয়।

গতকাল রোববার জোহরের আগেই হজ পালনকারীরা মিনায় পৌঁছান। লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমানের পদচারণায় মুখরিত মিনা প্রান্তর। রোববার (৮ জিলহজ) জোহর থেকে আরাফার দিন আজ সোমবার ফজর পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসল্লিদের জন্য মিনায় লক্ষাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবু স্থাপন করে আবাসনের ব্যবস্থা করেছে সৌদি সরকার। তাঁবুর বাইরে ছোট ছোট ড্রামভর্তি খাবার পানি। এ তাবুতেই ৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন এবং অবস্থান করবে হজপালনকারীরা।

আগামীকাল (৯ জিলহজ) ফজর নামাজ পড়ে সম্ভব হলে গোসল করে কিংবা ওজু করে হজের মূল কাজ আরাফার ময়দানে অবস্থানের জন্য যাবেন তারা। তালবিয়ার লাব্বাইক ধ্বনি এবং তাকবির, তাসবিহ-তাহলিলে মুখরিত হবে মিনা ও আরাফা প্রান্তর।

৯ জিলহজ ফজরের পর থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসলমান রওয়ানা হবে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে। সেখানে হজপালনকারীরা অবস্থান নেবেন জাবালে রহমত, মসজিদে নামিরাসহ আরাফাতের বিশাল ময়দানে।
জোহরের নামাজের আগেই তারা পৌঁছে যাবেন আরাফাতের ময়দানে। কেননা আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়ায়ই হলো হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।

জোহরের পর মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা প্রদান করা হবে।

মুসলিম উম্মাহর দুনিয়া ও পরকালীন জীবনের কল্যাণ ও দিক-নির্দেশনায় আসবে এ খুতবা থেকে। মুসলিম উম্মাহর চলমান সংকট ও উত্তরণের উপায় সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রসঙ্গের পাশাপাশি ধর্মীয় বিভিন্ন বিধি বিধানের আলোচনা থাকবে হজের খুতবায়।

হজ পালনকারীরা তাসবিহ-তাহলিল-তাকবির ও ইসতেগফারের মাধ্যমে দিনটি অতিবাহিত করবেন। অশ্রুসিক্ত নয়নে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। এ ময়দানেই আল্লাহ তাআলা হজরত আদম ও হাওয়া আলাইসি সালামকে ক্ষমা করে মিলিত করেছিলেন। সূর্যাস্তের পর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন হজপালনকারীরা।

৯ জিলহজ সূর্যাস্তের পর ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দান থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে হজপালনকারীরা। সেখানে গিয়ে তারা মাগরিব ও ইশা এক সঙ্গে আদায় করবেন।

৯ জিলহজ দিবাগত রাতে মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করা সুন্নাত। আর ১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পর সূর্য ওঠার আগে সামান্য সময় মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব।

১০ জিলহজ সূর্য ওঠার আগেই মিনার উদ্দেশ্যে মুজদালিফা ত্যাগ করতে হবে। মিনায় গিয়ে বড় জামরায় ৭টি কংকর নিক্ষেপ করতে হবে।

১০ জিলহজ কংকর নিক্ষেপের পর কুরবানি আদায় করতে হবে। কুরবানির পরের কাজই হলো মাথা ন্যাড়া করা।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবের সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী বিশ্বের ১৬৪টি দেশের ২০ লাখের বেশি মুসলমান এবার হজ করছেন, যাদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা সোয়া এক লাখের মতো।