বৃহস্পতিবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১২ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

গরুর কেজি আড়াই হাজার টাকা!

ডেস্ক রিপোর্ট : কাল বাদে পরশু ঈদ। হাটে হাটে বেচার অপেক্ষায় কোরবানির পশু। তবে সোমবার (২০ আগস্ট) পর্যন্ত হাট তেমন জমেনি। ঈদের দুদিন আগেও বেচাবিক্রির এই করুণ চিত্রের কারণ গরুর দাম। হিসাব কষে দেখা যাচ্ছে, কোরবানির জন্য কেনা একটি গরুর দাম পড়ছে কেজিপ্রতি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত।

হাটের পাশাপাশি বিভিন্ন ফার্ম থেকেও গরু কিনছেন মানুষ। সুদূর টেক্সাস থেকে সাতটি গরু এনে বেচেছে মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় গরু দেড় হাজার কেজি ওজনের ‘বাহাদুর’কে বেচা হয়েছে ২৮ লাখ টাকায়। অন্যদিকে এক হাজার ১০০ কেজি ওজনের গরুটিকে বেচা হয়েছে ২৫ লাখে।
গরুর ওজনের সঙ্গে দামের পর্যালোচনা করে জানা যায়, বাহাদুরের দাম পড়েছে কেজিতে এক হাজার ৮৬৬ টাকা এবং এক হাজার ১০০ কেজি ওজনের গরুটির দাম প্রতিকেজি দুই হাজার ২৭২ টাকা।
গাবতলী হাটে আসা বড় গরুর দাম পর্যালোচনা করে কেজিপ্রতি দাম আরও বেশি পাওয়া যায়। গাবতলী হাটে বিক্রির জন্য অপেক্ষায় থাকা সবচেয়ে বড় গরু ‘রাজাবাবু’র দাম হাঁকা হচ্ছে ৩০ লাখ টাকা। রাজাবাবু লম্বায় প্রায় ১৩ ফিট ও ওজন দুই হাজার ৯৪ কেজি। সেই হিসাবে কেজিতে রাজাবাবুর দাম আসে এক হাজার ৪৩২ টাকা। আরেক গরু ‘কালা মানিকে’র দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ লাখ। এটির ওজন এক হাজার ৬৮০ কেজি। সেই হিসাবে কেজিপ্রতি দাম আসে এক হাজার ১৯০ টাকা।

অভিজ্ঞ কসাইদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি গরুর প্রতি ১০০ কেজির মধ্যে ৩০ কেজির মতো ফেলে দিতে হয়। সে হিসাবে আরও বেড়ে যায় কেজিপ্রতি গরুর মাংসের দাম।
বাহাদুরের মাংস পাওয়া যাবে এক হাজার ৫০ কেজি, অর্থাৎ পশুটির কেজিপ্রতি মাংসের দাম পড়বে দুই হাজার ৬৬৬ টাকা। ২৫ লাখ টাকার গরুর শুধু মাংসের দাম আসে কেজিতে তিন হাজার ২৪৬ টাকা। রাজাবাবুর মাংসের দাম হয় কেজিতে দুই হাজার ৪৯ টাকা এবং কালা মানিকের মাংসের দাম আসে কেজিতে এক হাজার ১৯০ টাকা।

সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম সূত্রে জানা যায়, বিদেশ থেকে নিয়ে আসা সাতটি গরুর সবক’টিই বেচা হয়েছে। এরমধ্যে বাহাদুর নামের সবচেয়ে বড় গরুটি বেচা হয়েছে ২৮ লাখ টাকায়। বাহাদুরের ওজন দেড় হাজার কেজি। পশুটি লম্বায় ১০ ফুট। এক হাজার ১০০ কেজি ওজনের আরেকটি গরু বেচা হয়েছে ২৫ লাখ টাকায়।
মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের ২০ বছরের অভিজ্ঞ কসাই মুরাদ বলেন, ‘একটা গরুর প্রতি ১০০ কেজিতে ৩০ কেজি বাদ যায়। এই ৩০ কেজির মধ্যে ১০-১৫ কেজি থাকে ভুঁড়ি ও চামড়া আর মাথার খুলি, চোয়ালসহ অন্যান্য জিনিস চলে যায় আরও ১৫ কেজি।’
গরুর দাম নিয়ে মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব গরুর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি। বছরে লাখ টাকার মতো খরচ হয় এদের পেছনে।
রাজাবাবুকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে নিয়ে আসা ছান্নু মিয়া বলেন, ‘বড় গরুরে ভালো খাবার খাওয়াইতে হয়, তাই খরচ বেশি। রাজাবাবুর দাম উঠছে হাটে ১৮ লাখ টাকা। অনেক যত্ন করে দুই বছর ধরে পালছি। তার বয়স তিন বছর ১০ মাস। কেনার সময় ছিল ১৪-১৫ মণ আর এখন প্রায় ৫৩ মণ ওজন। এখন পর্যন্ত এই গাবতলী হাটের সবচেয়ে বড় গরু এটাই।’ বাংলা ট্রিবিউন