রবিবার, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ২৫শে ভাদ্র, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ভারতের সুপ্রিম কোর্টবৈধতা দিল সমকামকে

ডেস্ক রিপোর্ট।। সমকাম অপরাধ নয়, এটি বৈধ। ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারি আইনের একটি ধারা অবৈধ ঘোষণা করে এমন রায়-ই দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সমকামিতার অপরাধে এতদিন ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারত দায়ী ব্যক্তির।

আজ বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক এই রায়ে ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেছেন, কেউ তাঁর ব্যক্তি স্বাতন্ত্রকে এড়িয়ে যেতে পারে না। এখনকার সমাজ ব্যক্তি স্বাতন্ত্রের প্রশ্নে অনেক বেশি অনুকূল। ভারতের সংবিধান একজন সাধারণ নাগরিককে যেসব অধিকার দেয়, তার সবগুলোই সমকামী কমিউনিটির প্রাপ্য।

প্রসঙ্গত, ভারতের আইনের ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী অস্বাভাবিক যৌনতা অপরাধ। সমকামিতাকে এরই অংশ হিসেবে ধরা হয়। সমকামও অপরাধ ছিল। ১৮৬১সালের আইন অনুযায়ী এই অপরাধে ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারত।

অবশেষে ঐতিহাসিক মামলার রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়ে দিল সমকাম অপরাধ নয়। এর আগে ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় ৩৭৭ ধারা খারিজ হচ্ছে না। আজকের রায়ে ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র জানিয়ে দিলেন, সমকাম অপরাধ নয়।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই আইন অনুযায়ী অস্বাভাবিক যৌনতা অপরাধ। এই ধারা খারিজ কররা দাবিতে ফের মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এই মামলাটি শুনেছেন। এই বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও আছেন বিচারপতি আর এফ নরিমান, এ এম খানউইলকার, ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবঙ্গ ইন্দু মালহোত্রা।

জুলাই থেকে শুরু হয় এই বিচার প্রক্রিয়া। আবেদনকারীরা ব্যক্তিগত অধিকারের পক্ষে দাবি তুলে ধরেছেন। সমকামীদের দাবি ৩৭৭ ধারা প্রয়োগ করে তাঁদের হেনস্থা করা হয়। মামলার আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল পাঁচ জন। তাঁরা হলেন ভারতনাট্যম শিল্পী নভতেজ সিং জোহার, সাংবাদিক সুনীল মেহেরা, রিতু ডালমিয়া, হোটেল ব্যবসায়ী অমন নাথ এবং আয়েশা কুমার।

শুনানিতে আবেদনকারীদের দাবি ছিল ৩৭৭ ধারা সংবিধানের মূল ধারার বিরোধী। এরকম একটা ধারা বলবত থাকলে সাম্যের অধিকার লঙ্ঘিত হয়, সুবিচার পাওয়ার আশাও থাকে না। তাছাড়া সংবিধান কোনও রকম বৈষম্যকে স্বীকার করে না।

শুনানির সময় বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা জানান, পরিবার এবং সমাজের চাপে এ ধরনের মানুষদের অন্য লিঙ্গের সঙ্গে বিয়ে করতে হয় তাতে নানা রকম জটিলতা তৈরি হয়।

সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করবে না কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় ৩৭৭ ধারা খারিজ হচ্ছে না। তারও বছর চারেক আগে ২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট জানায় ৩৭৭ ধারা সংবিধানের মূল ধারার পরিপন্থী। তবে সে যুক্তি মানতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। উৎস : এনডিটিভি।