বৃহস্পতিবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১২ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

যুবক, যিনা, যৌনতা : একটি শিক্ষণীয় ঘটনা একদা এক মজলিসে এক যুবক এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল,

একদা এক মজলিসে এক যুবক এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ,আমাকে যিনা করার অনুমতি দিন।’একথা শুনে উপস্থিত সবাই চমকে উঠলেন এবং তাকে তিরস্কার করতে লাগলেন, কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (আদরের সহিত) আমার কাছে এসো, সে কাছে এল। বললেন, বসো, সে বসলো।

এরপর (তার ঊরুতে হাত রেখে) বললেন, ‘তুমি কি তোমার মায়ের জন্য এটা পছন্দ করবে?’
সে বলল, না ইয়া রাসূলুল্লাহ। আল্লাহ আমাকে আপনার প্রতি উৎসর্গিত করুন।
কোনো মানুষই তার মায়ের জন্য এটা পছন্দ করবে না।’
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তাহলে তোমার মেয়ের জন্য?’
যুবকটি বলল, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি আপনার প্রতি উৎসর্গিত।
কোনো মানুষই তার মেয়ের জন্য এটা পছন্দ করবে না।’
নবীজী (সা) জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে তোমার বোনের জন্য?’
যুবক বলল, ‘না ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি আপনার প্রতি উৎসর্গিত। কোনো মানুষই তার বোনের জন্য এটা পছন্দ করবে না।’
নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তাহলে তোমার ফুফুর জন্য?’
যুবক বলল,‘না ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি আপনার প্রতি উৎসর্গিত।
কোনো মানুষই তার ফুফুর জন্য এটা পছন্দ করবে না।’
নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে তোমার খালার জন্য?’
যুবক বলল, না কক্ষনো না। আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গিত করুন।
কোনো মানুষই তার খালার জন্য এটা পছন্দ করবে না।’
এরপর নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম তার শরীরে হাত রাখলেন এবং দুআ করলেন- ইয়া আল্লাহ তার গুনাহ ক্ষমা করুন, তার অন্তর পবিত্র করুন এবং তার চরিত্র রক্ষা করুন।
বর্ণনাকারী বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শিক্ষার ফলাফল এই হল যে, পরবর্তী জীবনে সে (রাস্তায় চললে) কোন দিকে চোখ তুলেও তাকাত না।
– [মুসনাদে আহমদ ৫/২৫৬-২৫৭ ]
* এই হাদীস থেকে শিক্ষা দেয় যে, একজন পুরুষ যার সাথে যেনা করবে সে নিশ্চই অন্য একজনের মা, মেয়ে, বোন, ফুফু কিংবা খালা… তাই সে যেমন নিজ মা, মেয়ে, বোন, ফুফু, খালাদের কে সম্মানের চোখে দেখে তেমন যদি অপরের মা, মেয়ে, বোন, ফুফু, খালাদেরকেও সম্মানের সাথে দেখে তাহলে সে এই অপরাধ করতে পারবেনা !
-দেখুন কেমন ছিল বিশ্ব মানবতার দূত নাবী মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি অয়াসাল্ললাম এর শিক্ষাদানের পদ্ধতি !
***
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, “রাসুল(সঃ) জিজ্ঞেস করা হল যে, ‘কোন আমল মানুষকে বেশি জান্নাতে নিয়ে যাবে?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহভীতি ও সচ্চরিত্র।‘ আর তাঁকে (এটাও) জিজ্ঞেস করা হল, ‘কোন আমল মানুষকে বেশি জাহান্নামে নিয়ে যাবে?’ তিনি বললেন, ‘মুখ ও যৌনাঙ্গ (অর্থাৎ উভয় দ্বারা সঙ্ঘটিত পাপ সমূহ।)”
[তিরমিজী:২০০৪]

আবু হুরায়রা (রঃ) থেকে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেন…হাশরের মাঠে যখন কোন ছায়া থাকবে না। তখন সাত শ্রেণীর মানুষ আল্লাহর আরশের ছায়ায় স্থান পাবে। তন্মধ্যে এক শ্রেণী হচ্ছে সেই ব্যক্তি তিনি এমন প্রস্তাব পেয়েও তা প্রত্যাখ্যান করে এই বলে যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি (সহিহ বুখারীঃ ৬২৭)

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; “কোন ব্যভিচার ব্যভিচারের সময়ে মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না। কোন চোর চুরির সময় মুমিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন মদখোর মদ খাওয়ার সময় মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না, কোন লুন্ঠনকারী লুন্ঠন করার সময় মুমিন অবস্থায় লুন্ঠন করে না”। [বুখারি,মুসলিম ও আবু দাউদ]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, “আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করার পর অবৈধভাবে কোন মহিলার সাথে সহবাস করার মত বড় পাপ আর নাই”।[আহমদ, তাবারানী]

“মানুষ তার সমগ্র ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে জিনা করে। দেখা হচ্ছে চোখের জিনা,ফুঁসলানো কণ্ঠের জিনা, তৃপ্তির সাথে কথা শোনা কানের জিনা, হাত দিয়ে স্পর্শ করা হাতের জিনা, কোনো অবৈধ উদ্দেশ্যে পথ চলা পায়ের জিনা, এভাবে ব্যভিচারের যাবতীয় ভূমিকা যখন পুরোপুরি পালিত হয়, তখন লজ্জাস্থান তার পূর্ণতা দান করে অথবা পূর্ণতা দান থেকে বিরত থাকে” -বুখারি, মুসলিম ও আবু দাউদ) ”
” নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য কারো মাথায় লোহার পেরেক ঠুকে দেওয়া ঐ মহিলাকে স্পর্শ করা থেকে অনেক ভালো, যে তার জন্য হালাল নয়।” – ত্বাবারানী ২০/২১২
“আমি মেয়েদের সাথে মুছাফাহা করিনা।” – আহমাদ৬/৩৫৮
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ” তোমাদের কারো মাথায় যদি লোহা দিয়ে আঘাত করা হয়, তবু এটা তার জন্যে ঐ মহিলাকে স্পর্শ করা থেকে উত্তম – যে তার জন্যে বৈধ নয়। “( তাবরানি, সহীহুল জামে-৪৯২১ )

“আমি মেয়েদের হাত স্পর্শ করিনা।” – সহীহুল জামে হাদীস নং ৭০৫৪ ।
এ প্রসংগে মা আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, “আল্লাহর শপথ, রসুল (সঃ) এর হাত কখনোই কোন বেগানা নারীর হাত স্পর্শ করেনি। তিনি কথার মাধ্যমে তাদেরকে বায়’আত করাতেন।” – মুসলিম ৩/১৪৭৯
***
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদকরেন:“তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেওনা। নিশ্চয় এটি অশ্লীল কাজ ও অসৎপন্থা।”(সূরা বনী ইসরাঈল: ৩২)“কোন রকম অশ্লীলতার কাছেও যেওনা তা প্রকাশ্যে হোকবা গোপনে হোক।”(সূরা আল-আনআম: ১৫১)
“যেদিন তাদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত ও পা সাক্ষী দিবে”। [সূরা আন নূর-২৪]
“যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফয়সালা খুবই মন্দ।” (Al-Ankaboot: 4)
“আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।” (Yaseen: 65)
“কস্মিনকালেও তারা মৃত্যু কামনা করবে না ঐসব গোনাহর কারণে, যা তাদের হাত পাঠিয়ে দিয়েছে। আল্লাহ গোনাহগারদের সম্পর্কে সম্যক অবগত রয়েছেন।” (Al-Baqara: 95)

“তোমাদের মধ্য থেকে যে দু’জন সেই কুকর্মে লিপ্ত হয়, তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু।” (An-Nisaa: 16)
“আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের অদৃশ্য বিষয় জানেন, তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন।”
(Al-Hujuraat: 18)

***ব্যভিচার হতে তওবা***
প্রশ্ন: আমি জানি না আমার ঠিক কি করা উচিত? আমি বড় একটা গুনাহ করে ফেলেছি। আমি জানি, আমাদের সুন্দর ধর্মে “ধর্মগুরুর কাছে স্বীকারোক্তি” এ রকম কিছু নেই। কিন্তু আমি যেনা করে ফেলেছি। আমি আল্লাহর কাছে তওবা করতে চাই এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে চাই। আমি সূরা নূরের মধ্যে পেয়েছি যে, আমার মত ব্যক্তি কোন পুতপবিত্রা নারীকে বিয়ে করতে পারবে না। এখন আমার কী করা উচিত? আমি আশা করব আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাআলা আমার জন্য জাহান্নামের শাস্তি লাঘব করেন।
এক:
আপনি আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হবেন না। আল্লাহ তাআলার এই বাণীটি অধ্যয়ন করুন“বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”।[সূরা যুমার, আয়াত: ৫৩]
দুই:
আপনি নিষ্কলুষভাবে আল্লাহর কাছে তওবা করুন। হারামের সকল পথ বন্ধ করে দিন। এই পাপে পুনরায় পতিত হওয়ার সকল উপায় উপকরণ কর্তন করুন। এছাড়া বেশি বেশি নেক কাজ করুন। কারণ নেককাজ বদকাজকে দূরীভূত করে দেয়।
তিন:
আপনি যদি আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ তওবা করে নেন তখন“ব্যভিচারী”বিশেষণ হতে আপনি রেহাই পাবেন। সেক্ষেত্রে পুতপবিত্র নারীকে বিয়ে করা আপনার জন্য জায়েয হবে।
চার:
আল্লাহর কাছে দোয়া করার ক্ষেত্রে মুমিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়া উচিত।‘আমার জন্য জাহান্নামের শাস্তি লাঘব করুন’মুমিন এই দোয়া না করে বরং দোয়া করবে‘হে আল্লাহ, আমাকে জাহান্নামের শাস্তি হতে নাজাত দিন। হে আল্লাহ, আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান এবং জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন’। সাথে সাথে মুমিন নেক আমল করে যাবে এবং বদ আমল হতে তওবা করে নিবে। (সূত্র – islamqa.info/bn/624।।
…………………………..
ভাবতে পারো !
ভাবতে কি পারো তোমার মাকে তোমার বাবা ব্যাতিত অন্য পুরুষ ভোগ করেছে ???
… কি রক্ত গর্জে উঠলো ??
কি ইচ্ছে করছে ??
তাকে ছিড়ে ফেলতে ?? তোমার মাকেও ঘৃণা করতে ইচ্ছে হচ্ছে ??
তোমাকে নয় তুমি আজ ডেটিং এর নামে আজ যে মেয়েটিকে ভোগ করছ , তার অনাগত শিশু কে এই প্রশ্ন ??…
কয় জনের ভালবাসা আছে যা বিয়ে পর্যন্ত ঘড়ায় ?
আজ আছে কাল এই সম্পর্ক থাকে না , দুই তিন মিনিটের এ অনন্দ সারা জীবনের জন্য আপনাকে অপবিত্র করে দেয় । জীবনেও কখনো আপনি নিজেকে পবিত্র ভাবতে পারবেন না !!!