বৃহস্পতিবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১২ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

মন্ত্রীর পা ধরেও কাজ হয়নি

মন্ত্রীর পা ধরে ও প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতিতেও নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া-আদমজী সড়কের কাজ শুরু করা যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। জবাবে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওই সড়কের কাজ দ্রত শুরুর জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সংসদ অধিবেশনে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সম্পূরক প্রশ্নের সুযোগ নিয়ে শামীম ওসমান বলেন, তিন বছর চেষ্টা করে চাষাঢ়া থেকে আদমজী পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে পারিনি। ওই রাস্তাটি হলে ৬ লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবে।

তিনি আরও বলেন, রাস্তাটি আগে রেলওয়ের ছিল। রেলওয়ের কাছ থেকে অবমুক্ত করতে দুই বছর সময় লেগেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজে সেখানে গেছেন। তিনি রেলমন্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলেছিলেন। পরে তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তিনি ঘোষণা দিয়ে ছিলেন ওই রাস্তাটির কাজ দ্রুত শুরু হবে। মন্ত্রী ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে ছিলেন। ডিপিপিতে কিছু ত্রুটি থাকায় পরিকল্পনা কমিশন সেটি ফেরত দিয়েছিল। ত্রুটি সংশোধন করে আবারও পরিকল্পনা মন্ত্রণালায়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি ৪ থেকে ৫ মাস হয়ে গেছে। এরপর আমি পরিকল্পনা মন্ত্রীর পায়ে ধরে অনুরোধ করেছি। তার পায়ে ধরতে আমার একটুও খারাপ লাগেনি। কারণ আমি তার পা ধরেছি জনগণের জন্য। তারপরও কাজ হয়নি। এখন আমার করণীয় কি?

জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে ওই সড়ক প্রস্তুতকরণের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জে জনসভা শেষেই সেখান থেকে রেলপথ মন্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করি। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রকল্প প্রনয়ণ করা হয়েছে। যা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। পরিকল্পনা মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ওই সড়কের কাজ দ্রুত শুরুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সংরক্ষিত আসনের সদস্য বেগম হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত গত ৩৭ বছরে মাত্র ৯১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চারলেন বা তদুর্ধ্ব লেনে উন্নীত হয়েছে। আর বর্তমান সরকারের গত ৯ বছরের শাসনামলে ৩৭৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেন বা তদুর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে। বর্তমানে ১০১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে।

তিনি আরও জানান, উন্নত খাতের আওতায় ৩ হাজার ৯৩০ কিলোমিটার মহাসড়ক মজবুতীকরণসহ ৪ হাজার ৫৯১ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্তকরণ করা হয়েছে। এছাড়া ৮৪২টি সেতু ও ৩ হাজার ৫৪৬টি কালভার্ট নির্মাণ ও পুণঃনির্মাণ করা হয়েছে।

সরকার দলীয় সদস্য মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে সড়ক মন্ত্রী জানান, ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরীণ সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, প্রবেশ ও নির্গমন মহাসড়কের যানজট নিরসন এবং ঢাকা ও পাশ্ববর্তী এলাকার জন্য পরিকল্পিত ও সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাস র‌্যাপিট ট্রানজিট (বিআরটি) ও মেট্টোরেল (এমআরটি) প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এছাড়া ঢাকার চারপাশে ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ইনার সার্কুলার রুট এবং মিডল সার্কুলার রুটের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ৬০ এর ৩(৫) ধারায় নির্দিষ্ট স্টপেট ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি থামানো যাবে না মর্মে উল্লেখ রয়েছে। নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি থামানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণও ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।

তিনি আরও জানান, সড়ক দুর্ঘটনা রোধকল্পে বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি পেশাজীবী গাড়ি চালকদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে লিফলেট, পোস্টার ও স্টিকার বিতরণ করা হচ্ছে।