মঙ্গলবার, ৯ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২৪শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

‘রাজনীতি এখন গরীবের বউয়ের মতো’

রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চ্যান্সেলর আবদুল হামিদ বলেছেন, বর্তমানে রাজনীতি হচ্ছে গরিবের বউ আর সকলের ভাউজের মতো। গ্রামের ভাষায় ভাউজ অর্থ হচ্ছে ভাবি। গরিবের বউ হচ্ছে সবার ভাবি। বর্তমানে রাজনীতিও হয়ে গেছে গরিবের বউ আর সকলের ভাবীর মতো। যে কেউ চাইলেই রাজনীতিতে আসতে পারছে। কিন্তু অন্য পেশায় কেউ চাইলেই যেতে পারে না।

শনিবার দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ‘সমাবর্তন বক্তা’ হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. এনামউজ্জামান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা আছে, কিন্তু রাজনীতিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে তা নেই। যখন ইচ্ছা যে কেউ চাইলেই রাজনীতিতে প্রবেশ করতে পারে। এ জন্য চাকরিজীবীরা অবসর নিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করছেন।

দেশ গড়ার কাজে নবীন গ্রাজুয়েটদের নেতৃত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, অতীতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের সকল আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতার পর দেশ গড়ার দায়িত্ব অনেকাংশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ছিলো। এই বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় কাণ্ডারীর ভূমিকা পালন করে গেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বমানের মানব সম্পদ তৈরির নতুন চিন্তা, গবেষণা ও উদ্ভাবনী এবং আত্মনিয়োগ করার ফলপ্রসূ অংশগ্রহণ করা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ। নানা প্রতিকূলতায়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সফল হয়েছে।

তিনি বলেন, গ্রাজুয়েটরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নানা ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। তাই দেশের দ্রুত উন্নয়নে তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। এসময় অপ্রয়োজনীয় বা কম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। তবে এই সংযোজন, বিয়োজন বা সম্প্রসারণ কোনটাই যেন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা কতিপয় লোকের স্বার্থে না হয়।

এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২১ হাজার ১১১ জন গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন, যা ঢাবির ইতিহাসে সর্বাধিক। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কৃতি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ৯৬টি স্বর্ণপদক, ৮১ জনকে পিএইচডি এবং ২৭ জনকে এম ফিল ডিগ্রি দেয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের ভেন্যু ছাড়াও সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজে আলাদা দুটি ভেন্যু ছিল। তারা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সেখানে বসে সমাবর্তন অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পেরেছেন।