রবিবার, ১১ই নভেম্বর, ২০১৮ ইং ২৭শে কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনাকে ৩ দিনের মধ্যে সরকার থেকে ফেলতে পারি: কাদের সিদ্দিকী

ঐক্যফ্রন্টের আয়োজনে রাজশাহীতে চলা সমাবেশে বিপুল লোক সমাগম হয়েছে। ওই সমাবেশে যে কয়জন মেয়ে উপস্থিত হয়েছেন তাদের অর্ধেক নিজের দলে থাকলে শেখ হাসিনাকে তিন দিনের মধ্যে সরকার থেকে ফেলে দিতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, এই মিটিংয়ে যে কয়টা মেয়ে এসেছে, আমার দলে এর অর্ধেক মেয়ে থাকলে আমি শেখ হাসিনাকে তিন দিনের মধ্যে সরকার থেকে ফেলে দিতে পারি। তিনি বলেন, আমি টাউন হল থেকে সড়ক পথে এখানে এসেছি। রাস্তায় রাস্তায় হাসিনার পুলিশেরা বাধা দিয়েছে। আমাদের ফেরাতে পারে নাই, এই মাঠের মানুষকেও ফেরাতে পারে নাই। পুলিশ ভাইদের বলি, সংসদে থাকতে অন্তত সাত বার তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব করেছিলাম। সেজন্য আজ এত বেতন। সুতরাং হাসিনার কথা নয়, আমার কথাও একটু-আধটু শুনবেন আপনারা।

তিনি বলেন, যে পুলিশরা ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন, তাদের রাজশাহীর এই মাঠে আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি তাদের টাকা আমি ফিরিয়ে দিব। সব টাকা আমি দিতে পারব না, তবে আওয়ামী লীগের আমলে যেসব পুলিশ ভর্তি হয়েছেন তাদের ১০ লাখ টাকা করে ফিরিয়ে দিব। কারণ মন্ত্রী-পাতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী মিলে ১০ লাখেরও বেশি করে খেয়েছে ওরা।বক্তব্যের শুরুতে কাদের বলেন, আমি কাদের সিদ্দিকী কিন্তু বিএনপির সভায় আসি নাই। কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের সভায় এসেছি। আপনারা যদি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চান তবে আপনাদের ঐক্যফ্রন্টকে অটুট রাখতে হবে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যারা নোংরা রাজনীতি লালন করছে- অদূর ভবিষ্যতে তাদের বিচার করা হবে।তিনি বলেন, বিএনপি রাজাকারের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেয় নাই- প্রথম পতাকা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, ২০১৫ সালে খালেদা জিয়াকে অবরোধ প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সেই সময় তিনি আমার কথা রাখেননি বলে জনগণ তাকে প্রত্যাখান করেছিল। যার মাসুল তাকে এখনও দিতে হচ্ছে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছিলাম আলোচনায় বসার জন্য। তিনি দেরিতে হলেও বসেছেন। এটা ঐক্যফ্রন্টের একটা বিজয়।জনসভায় আরো বক্তব্য দিয়েছেন অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, শহীদুল্লাহ কায়সার, আবদুল গোফরান, শাহজাহান মিয়া, আবদুর রউফ ইউছুপ, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হারুনুর রশিদ, নাদিম মাহমুদ, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শাহ আহমদ বাদল, মোস্তাক আহমেদ, এ টি এম গোলাম, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, রফিকুল ইসলাম, সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া প্রমুখ।

এর আগে শুক্রবার দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভা শুরু হয়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আজকের জনসভায় যোগ দিতে পারেননি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।জনসভায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। এরই মধ্যে জনসভায় যোগ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, বিজেপির সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।

এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন নগরীর সাহেববাজারে নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করছেন। নগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনসহ সাত দফা দাবি আদায়ে নবগঠিত জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজশাহীতে এটি চতুর্থ সমাবেশ। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল