সোমবার, ১লা এপ্রিল, ২০১৯ ইং ১৮ই চৈত্র, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

অধিক পরিশ্রমে চিড় ধরে হাড়ে?

news-image

অনলাইন ডেস্ক : ব্যথা পেয়ে হাত পা ভাঙা বা মচকে গেলে চিকিৎসা করে তা ঠিক করা যায়। কিন্তু অদ্ভুত ধরনেরও একটি হাড় সমস্যা আছে। যা এত সূক্ষ্ম যে তা বোঝাই যায় না আর ব্যথার তীব্রতাও নেই। তবে ধীর গতিতে ভোগায় অনেক দিন। যাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয়, স্ট্রেস ফ্র্যাকচার।

যাদের হয়

সাধারণত যারা অত্যন্ত বেশি শারীরিক পরিশ্রম করেন তাদেরই এই ধরনের হাড়ের সমস্যা বেশি হয়। বিশেষত যারা খেলাধুলা করেন অথবা মিলিটারি তারা এই ব্যথায় কষ্ট পান। এতে হাড়ের যে স্থানে খুব চাপ পড়ে সেখানকার হাড়ে খুব সূক্ষ্ম চিড় ধরে।

সাধারণত চোট লেগে এই সমস্যা হয় না। হাড়ে দীর্ঘসময় চাপ পড়তে পড়তে এই সমস্যা শুরু হয়। তবে বর্তমানে যাদের প্রতিদিন অত্যাধিক পরিশ্রম করতে হয় তাদের ক্ষেত্রেও এই ব্যথার সমস্যা প্রায়ই দেখা দেয়। যারা খুব বেশি হাঁটেন, খেলাধুলা করেন ও অনেক ভার বহন করেন তাদেরও এই ধরনের ফ্র্যাকচার হতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন

সাধারণত এই ফ্র্যাকচারে যে খুব ব্যথা হয় তা নয়। তবে কাজ করলেই তখন ওই স্থানটি ফুলে ওঠে। অল্প বিশ্রাম নিলে বা সেই স্থানে বরফ লাগালে তা কমে যায়। প্রয়োজনে অনেকেই ব্যথা কমাতে পেইন কিলার খেয়ে আরাম পান। তখন মনে করেন হয়তো ব্যথা ঠিক হয়ে গেছে। এই ব্যথা এত সহজে কিন্তু কমে না। তা বারবার ফিরে আসে।

শরীরের কোন অংশে হয়?

অধিকাংশেরই এই ধরনের ফ্র্যাকচার হাঁটুর নিচের হাড়ের অংশে ও পায়ের পাতায় আঙুলের সঙ্গে যুক্ত যে পাঁচটা হাড় থাকে সেই হাড়ে হতে দেখা যায়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে পেলভিক হাড়ে বা কোমর ও পায়ের জয়েন্টে যে হাড় থাকে সেই হাড়েও এমন হতে পারে।

চিকিৎসা

এই ফ্র্যাকচার কিন্তু হাড় ভেঙে যাওয়ার মতো নয়। খুবই সুক্ষ্ম ব্যাপার। প্রায় ৬ সপ্তাহ রেস্ট নিলেই এই সমস্যা ঠিক হয়ে যায়। তবে, কারো যদি এই ব্যথা থাকে তাও কারণ বুঝতে না পেরে যদি অনবরত পরিশ্রম করতে থাকেন ও হাড়ে চাপ পড়তে থাকে। তবে পরবর্তীকালে তা হাড় ভাঙার পর্যায়ে চলে যায়।

কখন ঝুঁকি বাড়ে

এই ব্যথা অবহেলা করলে হয় বিপদ। যা দিয়ে একটা সময় ক্রনিক ব্যথা হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ওই সূক্ষ্ম ভাঙা জায়গায় নতুন হাড় বা মাংস গজাতে শুরু করে। যা আরো মারাত্মক।

যা খেতে হবে

বিশেষ করে যাদের শরীরে ভিটামিন ডি বা ক্যালসিয়ামের অভাব রয়েছে তাদের হাড়ের এই ধরনের ফ্র্যাকচার দেখা যায়। এছাড়া বয়স্কদের হাড় নরম হতে থাকলে একটা সময় হাঁটাচলা করলেই হাড়ে এই ফ্র্যাকচার হতে পারে।

সতর্কতা

এই ধরনের ফ্র্যাকচার রোধ করতে শরীরে ভিটামিন ডি–এর মাত্রা ঠিক রাখা জরুরি। গায়ে রোদ লাগাতে হবে। পর্যাপ্ত ভিটামিন–ডি না থাকলে যে কোনো বয়সে অল্প পরিশ্রমেই হেয়ার লাইন ফ্র্যাকচার হতে পারে। ৪০ বছরের পর পরীক্ষা করে মেপে দেখা উচিত এই ভিটামিনের মাত্রা ঠিক আছে কিনা। নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে।