g না জানা লেবাননের নির্মম ইতিহাস !  | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শুক্রবার, ১০ই নভেম্বর, ২০১৭ ইং ২৬শে কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

না জানা লেবাননের নির্মম ইতিহাস ! 

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ১৪, ২০১৭

---
লেবানন থেকে জহির রায়হান : ভূমধ্যসাগড়ের পারে হাজারও বছরের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে স্বমহিমায় অবস্থান করছে বরফ ঢাকা পাহাড় ঘেরা মনোরম পরিবেশে লেবানন। বার বার যুদ্ধের কবলে পড়েও নিজেকে ফিরিয়ে আনার তাগিদ লেবাননের মধ্যে ছিল সব সময়ই। আর এতগুলো সঙ্ঘাতের ঘা মুছে ফেলে আবারও পর্যটকদের আকর্ষণ করে চলছে সামনে। সেই লেবাননকে নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।
ভূমধ্যসাগড়ের  পাড়ে অবস্থিত পশ্চিম এশিয়ার একটি দেশ। হাজারও বছরের বৈচিত্রময় ইতিহাস ঐতিহ্য যেমন লেবাননকে ঘিরে রেখেছে ঠিক তেমনিভাবে এর স্থলভাগটি ঘিরে রেখেছে সিরিয়া ও ইজরাইল। আর ভূমধ্যসাগড় তো পা ধুয়ে দিতে অনেকটুকু জায়গাজুড়ে আপো করছে।
মূলত, লেবানন ছিল ফিনিশিয়দের আবাস্থল। তাদের সংস্কৃতি সমৃদ্ধি লাভ করেছে ইংরেজি সাল গননার আগের ২৫০০ বছর ধরে। এরপর একে একে অনেকেই এসেছে শাসন করেছে লেবাননকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লেবাননের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয় ফ্রান্সের উপর। ১৯৪৩ সালে এটি স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৪৬ সালে লেবানন থেকে তার সব সৈন্য সরিয়ে নেয়। আর সে সময়ই লেবাননে প্রতিষ্ঠিত হয় পুরোপুরি অন্যরকম এক রাজনৈতিক পদ্ধতি, যাকে “কনফেসনালিজম” বলা হহয়।
লেবাননে মোট ১৮ টি ধর্মের লোক বাস করে। এর মধ্যে প্রধান তিনটি গোত্রের মধ্যে রাজনীতি বন্টন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হবেন খৃষ্টান, প্রধানমন্ত্রী হবেন মুসলিম সুন্নি এবং স্পিকার হবেন শিয়া সম্প্রদায় থেকে। ধর্মীয় জনসংখ্যা অনুপাতের ভিত্তিতে ও মতাবন্টনের এ রকম রীতি লেবানন ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও নেই।
১৯৭৫-৯০ সালের আগ পর্যন্ত দেশটিতে বিরাজ করছিল শান্তি ও সমৃদ্ধশীল অবস্থা। এর আগে এবং পরে একে একে সংঘটিত হয় অনেক যুদ্ধই। ১৯৪৮ সালে আরব-ইজরাইল যুদ্ধ।
১৯৮২ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হয় এবং তা ১৯৯০ সালে তায়েফ চুক্তির মাধ্যমে এ গৃহযুদ্ধ বন্ধ হয়।
২০০৫ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারী মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি এক গাড়ি বোমায় নিহত হহন। তিনি ছিলেন পশ্চিম সমর্থিত ১৪ অ্যালায়েন্সের নেতা। পরে এই হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উন্মোচনে আন্তর্জাতিক তদন্ত পরিচালনা করা হয়। পরে তা ২০০৫ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, রফিক হারিরি হত্যাকান্ডে সিরিয়া ও লেবাননের কয়েকজন উচ্চ পদস্ত নেতা এর সাথে জড়িত ছিল।
২০০৬ সালের ১২ ই জুলাই ইজরাইল-লেবানন যুদ্ধ সংঙ্ঘটিত হয়। তারপর ২০০৬ সালের ১৪ ই আগষ্ট জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি ঘোষনা করলে যুদ্ধ বন্ধ হয়। আবারও শুরু হয় ২০০৮ সালে অভ্যন্তরিন দন্ড।
এসব যুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক সাহায্যের মাধ্যমে লেবানন নিজের জখমগুলো আবারও ঢেকে ফেলার সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। বলা যায় যে, সে চেষ্টায় তারা অনেকটাই সফল।কারণ, বিশ্বজুড়ে যখন মন্দাভাব চলছিল তখনও লেবাননের স্টক মার্কেটের সূচক ছিল উপরের দিকেই। ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয় তারা। লেবানিসদের ইতিহাস ছিল বড়ই নির্মম। কিন্তু তারা হিম্মৎ হারেনি, অদম্য শক্তিতে শত্রুর বিরুদ্ধে মোকাবেলা করেছে। আজ তারা সয়ং সম্পূর্ণ এবং স্বাধীন একটি দেশের নাগরিক।
                                   জহির রায়হান
                        সাংবাদিক, লেখক ও কলামিষ্ট
        ই-মেইলঃ [email protected]

এ জাতীয় আরও খবর