রবিবার, ৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ২৩শে মাঘ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ফোরামের উদ্যোগে নতুন  করে বাঁচার স্বপ্ন আত্মনির্ভরশীল হিজড়াদের

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলা নারী  ফোরামের উদ্যোগে হিজড়াদের স্বনির্ভর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংগঠনটি প্রায় ২০ জন হিজড়াকে দিয়েছে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ। তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে কাজ করে চলার জন্য বিভিন্ন উপকরণও দেবে এ সংগঠন। এতে করে হিজড়াদের জীবনের মোড় ঘুড়ে যাবে বলে আশাবাদী উদ্যোক্তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে ও সদরের বিভিন্ন স্থানে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে হিজড়ারা। বিয়ের গাড়ি আটকে চাঁদা নেয়া ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা তোলা ছিল হিজড়াদের নিত্যদিনের কাজ। হিজড়াদের এসব কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ।
উপজেলা গভর্ন্যান্স প্রজেক্টের অর্থ সহায়তায় সদর উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের উদ্যোগে সাতজন হিজড়াকে হস্তশিল্প, সাতজনকে বিউটিফিকেশন এবং ছয়জনকে সেলাইয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ।
সরেজমিনে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায় হিজড়াদের প্রশিক্ষণের চিত্র। জেলা যুব উন্নয়ন অধিদফতরের পোশাক তৈরির ইন্সট্রাক্টর সালমা আক্তার হিজড়াদের পোশাক সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন।
প্রশিক্ষণ নিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  এক হিজড়া  বলেন, প্রায় বছর পাচেঁক  আগে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ ডিগ্রি কলেজে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পড়া অসমাপ্ত রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে আসেন তিনি। পরে হিজড়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। তিনি এখন ছদ্দ নাম  ফারজানা বিলকিস নামেই বেশি পরিচিত।
তিনি আরও বলেন, হিজড়া হিসেবে নয়, ছেলে হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চান তিনি। এখান থেকে প্রাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের সকল হিজড়াদের জন্য রোল মডেল হিসেবেও গড়ে ওঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সে। প্রশিক্ষণ নেয়া হ্যাপী, মৌসুমী এবং আশার মতো বাকি হিজড়ারাও তাদের অভিশপ্ত হিজড়া জীবন ত্যাগ করে মানুষের মতো নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠত করতে চান। তারা আত্মনির্ভরশীল হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চান।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, হিজড়াদের অবহেলা নয় বরং বিশেষ দৃষ্টিতে তাদের দেখা উচিত। হিজড়াদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলার জন্য আমরা তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। প্রশিক্ষণ শেষে বিউটিফিকেশনের প্রশিক্ষণার্থীদের বিউটি বক্স ও সেলাই প্রশিক্ষণার্থীদের সেলাই মেশিন দেয়া হবে। এছাড়া তাদেরকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজে লাগানোরও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।