বুধবার, ২২শে মার্চ, ২০১৭ ইং ৮ই চৈত্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

একবার এই গ্রামটিতে আপনার যাওয়া উচিত ! এশিয়ার পরিচ্ছন্ন গ্রামের তকমা পেল মাওলিননং

AmaderBrahmanbaria.COM
মার্চ ১৮, ২০১৭

হিমা আক্তার : গ্রামে স্বাক্ষরতার হার একশো শতাংশ। মাতৃতান্ত্রিক এই গ্রামে নিয়ম অনুযায়ী পারিবারিক সম্পত্তি মায়ের থেকে পরিবারের সবথেকে ছোট মেয়ের হাতে যায়। মাওলিননং। মেঘালয়ের পূর্ব খাসি পাহাড় জেলার এই গ্রামটিতে আপনাকে স্বাগত। ছবির মতো এমন গ্রাম হয়তো এদেশে কেন, গোটা বিশ্বেই অসংখ্য আছে। কিন্তু প্রকৃতি মানুষকে ঢেলে দিলেও কতজন তা রক্ষা করতে পারে?

মাওলিননংয়ের খাসি সম্প্রদায়ের মানুষরা তা পেরেছেন। এবং পেরেছেন বলেই এশিয়া এবং ভারতের সবথেকে পরিচ্ছন্ন গ্রামের শিরোপা পেয়েছে মাওলিননং। কয়েকদিন আগেই যে গ্রামটিতে ঘুরে এসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এখানেই শেষ নয়, গ্রামটির আরও কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

রাস্তা হোক বা বাড়ি, এরকমই পরিচ্ছন্ন মাওলিননং।

ছবির মতো পাহাড় এবং ঝর্নায় ঘেরা এই গ্রামটি মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। ২০১৫ সালের হিসেব অনুযায়ী, এই গ্রামটিতে মাত্র পাঁচশোজন বাসিন্দা ছিলেন। মোট পরিবারের সংখ্যা ৯৫। গ্রামে স্বাক্ষরতার হার একশো শতাংশ। মাতৃতান্ত্রিক এই গ্রামে নিয়ম অনুযায়ী পারিবারিক সম্পত্তি মায়ের থেকে পরিবারের সবথেকে ছোট মেয়ের হাতে যায়। এমনকী, মেয়েরা মায়ের পদবীই ব্যবহার করেন। মূলত সুপারি উৎপাদন করেই জীবিকা নির্বাহ করেন এই গ্রামের বাসিন্দারা।

মাওলিননংয়ের পথ।

কিন্তু কীভাবে এশিয়ার সবথেকে পরিচ্ছন্ন গ্রামের তকমা পেল মাওলিননং? এই গ্রামের যাবতীয় বর্জ্য বাঁশ দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ডাস্টবিনের মধ্যে সংগ্রহ করা হয়। তারপরে সেই বর্জ্য থেকেই সার তৈরি করা হয়। ২০০৩ সালে একটি আন্তজার্তিক ট্রাভেল ম্যাগাজিনের থেকে এশিয়ার সবথেকে পরিচ্ছন্ন গ্রামের স্বীকৃতি পেয়েছিল মাওলিননং।

বাসিন্দারাই গ্রামকে পরিপাটি করে রাখেন।

তারপর থেকে একাধিকবার সেই সম্মান জিতে নিয়েছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের কোনও বাসিন্দাই যত্রতত্র আবর্জনা ফেলেন না। বরং এখন তাঁরা প্লাস্টিকের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করার উপরে জোর দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, গ্রামের জঙ্গল এবং সবুজায়ন রক্ষা করতে মাওলিননংয়ের বাসিন্দারা নিয়মিত গাছ লাগান।

গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি মাওলিননংয়ের এই সাঁকো গোটা ভারতে অন্যতম বিস্ময়!

 

শিলং থেকে মাওলিননংয়ের দূরত্ব মাত্র ৯০ কিলোমিটার। ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তে পাহাড়, জঙ্গল, ঝর্নায় ঘেরা এই গ্রামটি মেঘালয়ের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে উঠে এসেছে। গ্রামের পাহাড়ি একটি ঝর্নার উপরে গাছে শিকড়ের তৈরি সাঁকোও পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের জিনিস। একবার যাবেন নাকি এশিয়ার সবথেকে পরিচ্ছন্ন ছবির মতো এই গ্রামে?