বুধবার, ২১শে জুন, ২০১৭ ইং ৭ই আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

১৯৩৮ সালের আইনে ফিরছে বীমা খাত

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ১৮, ২০১৭
news-image

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : নানা জটিলতার কারণে নতুন আইন চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৯৩৮ সালের বীমা আইন চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। উল্লেখ্য, দেশের বীমা খাত পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বীমা আইন পাস হয় ২০১০ সালে। এর আগ পর্যন্ত ১৯৩৮ সালের আইনের আওতায় পরিচালিত হয়েছে খাতটি।

একই বছর পাস হয় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইন, যার আওতায় গঠন করা হয় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। ওই সময়ের পর পেরিয়ে গেছে প্রায় সাত বছর। এ দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে এখনো তৈরি হয়নি বীমা খাতের অধিকাংশ প্রবিধান, নীতিমালা বা গাইডলাইন। উল্টো নিয়ন্ত্রক সংস্থার ব্যর্থতায় ভুলে বাতিল হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রবিধান ও গাইডলাইন। একই সঙ্গে নতুন ও সঠিক প্রবিধান তৈরির আগ পর্যন্ত ১৯৩৮ সালের বীমা আইনটিই পরিপালনের নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।

আইডিআরএ গঠনের পর প্রায় ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও অ্যাকচুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন (ঝুঁকি নিরূপণ, আর্থিক ভিত্তি, সম্পদ ও দায় মূল্যায়ন) সংক্রান্ত কোনো বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি এখনো। এ বিধিমালা চূড়ান্ত না করেই গত এপ্রিলে একটি গাইডলাইন জারি করে আইডিআরএ। বিধিমালা ছাড়াই গাইডলাইন জারির বিষয়টিতে আপত্তি তোলেন খাতসংশ্লিষ্টরা। শেষ পর্যন্ত গাইডলাইনটি বাতিল করতে বাধ্য হয় আইডিআরএ নিজেই।

এ বিষয়ে আইডিআরএর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোকুল চাঁদ দাস গণমাধ্যমকে বলেন, গাইডলাইনটির কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। তাই তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর এক্ষেত্রে নতুন বিধি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত ১৯৩৮ সালের আইনটিই পরিপালনের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

বীমা খাতের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের (বিআইএফ) প্রেসিডেন্ট বিএম ইউসুফ আলী জানান, অ্যাকচুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন নিয়ে নতুন গাইডলাইনটি বাতিলের সুপারিশ জানিয়ে ফোরামের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছিল। গাইডলাইনে যে পদ্ধতিতে ভ্যালুয়েশন করতে বলা হয়েছে, তা প্রয়োগ করা হলে জীবন বীমা খাতের লভ্যাংশ ও বোনাস আশঙ্কাজনক হারে কমে যাবে। এর ধারাবাহিকতায় বিনিয়োগকারী ও গ্রাহকরা মুখ ফিরিয়ে নিলে তা খাতটির জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। এ কারণে নতুন বিধি তৈরির আগ পর্যন্ত আমরা ১৯৩৮ সালের আইনেই অ্যাকচুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন করব। আর নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এতে সম্মতি দিয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুধু ‘ছক’জনিত একটি ভুলের কারণে ‘নন লাইফ বীমা ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ব্যয় সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণী প্রবিধানমালা, ২০১৬’ বাতিল করা হয়। পাশাপাশি গত ১৫ মার্চের মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি নতুন নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা দেয়া হলেও তা এখনো হয়নি। এক্ষেত্রেও নতুন নীতিমালা তৈরির আগ পর্যন্ত ১৯৩৮ সালের আইনটি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোকে।

জানা যায়, সাধারণ বীমা ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণী একটি প্রবিধানমালা গত বছরের ১৮ জুলাই গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। শুরু থেকেই প্রবিধানমালাটি সময়োপযোগী নয় বলে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন বীমা খাতের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীরা। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা করেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রবিধানমালাটি বাতিল করা হয়।

বৈঠকে আইডিআরএর উদ্দেশে অর্থ সচিব বলেন, যে নিয়ামকগুলোর ভিত্তিতে প্রবিধানমালাটি তৈরি হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই অর্থমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে ১৫ মার্চের মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি নতুন নীতিমালা তৈরির অনুরোধ জানানো হয়। নতুন নীতিমালা তৈরির আগে আইডিআরএকে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে যতবার প্রয়োজন ততবার বৈঠকে বসার নির্দেশনাও দেয় মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন তৈরি করে আইডিআরএ। এতে গত সাত বছরে দেশের ৪৩টি সাধারণ বীমা কোম্পানি আইন ভেঙে এক হাজার ৪৫২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে বীমা আইন, ২০১০-এর ২৯ ধরায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কোম্পানিগুলোয় নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে আইডিআরএ। এ নিরীক্ষা কার্যক্রমে ২০১৩-১৫ সময়ে বীমা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ, ঋণ, অগ্রিম, স্থায়ী ও অন্যান্য সম্পদ, গাড়ি, জমি ও বিল্ডিং, নগদ টাকা, ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা কী পরিমাণ বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েছেন, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ওই তিন বছরের আয়, ব্যয় ও সম্পদ-সম্পর্কিত সব তথ্য।

খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, শুধু সাধারণ বীমা খাতের ব্যয়-সংক্রান্ত প্রবিধান বা জীবন বীমা কোম্পানির অ্যাকচুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন-সংক্রান্ত গাইডলাইনই নয়, বরং এ খাতের বিনিয়োগ, জীবন বীমা কোম্পানির ব্যয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সবকিছুই চলছে ১৯৩৮ সালের আইনে। খাতটিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে বীমা আইন প্রণয়ন করা হয়, যার সঠিক বাস্তবায়নের জন্য গঠন করা হয় আইডিআরএ। কিন্তু শুধু নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বলতার

এ জাতীয় আরও খবর