মঙ্গলবার, ২৯শে মে, ২০১৮ ইং ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

সরাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই মুমূর্ষু, ভোগান্তিতে রোগীরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল দশার কারনে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ২৪ জন চিকিৎসকের স্থলে মাত্র ৯ জন চিকিৎসক দিয়েই ঢিলেঢালাভাবে চলছে সরাইল উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতালটি। নেই কোন কনসালটেন্ট, নেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ডেপুটেশন নামক শব্দটিই পঙ্গু করে দিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা ও হাসপাতালকে। এতে করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা দিশেহারা হয়ে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন ।

সরেজমিনে ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হাসপতালের চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যায় রোগীদের দুর্ভোগ চরমে। সরাইলের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১০ সালে ২৫ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি হলেও নানা সমস্যায় হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এতে রয়েছে চিকিৎসক সহ জনবল সংকট। হাসপাতালটিতে ২৪ জন চিৎিসকের মধ্যে ১১ জন ডেপুটেশনে থেকে এখান থেকে বেতন ভাতা নিচ্ছেন। বাকি ১৩ জনের মধ্যে ৪জন ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। আর ৯জন কাগজে কলমে থাকলেও তাদের মধ্যে অনেকে নিয়মিত হাসপাতালে না আসার অভিযোগ করছেন।

এতে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা । মাত্র ৯ জন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা জোড়াতালি দিয়ে চলছে। জরুরি বিভাগে পিয়ন আয়া দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। সার্জারি ও এনেসথেসিয়া ডাক্তার এবং গাইনি বিভাগে কোন ডাক্তার না আসায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধ ২ টি ওটি রুমের যন্ত্রপাতি ও ডেলিভারি ভ্যানটি জংধরে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। তবে একদিকে চিকিৎসক সংকট আরেকদিকে দালালদের দৌরাত্মে সব মিলিয়ে অনেকটা অসহায় রোগীরা।

এছাড়া রোগীদের ব্যবহারের বাথ রুমগুলোতে ময়লা আবর্জনার স্তুপ হয়ে দুর্গন্ধে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডটিতে দরজা জানালা ভাঙা, লাইট ফ্যান পর্যাপ্ত নেই,বাথরুম অপরিচ্ছন্ন।

বেশ কয়েকজন রোগী জানান, এই হাসপাতালে আমরা আসি চিকিৎসা নেয়ার জন্য কিন্তু সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ডাক্তারের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আমরা আরো অসুস্থ হয়ে পড়ি। আর হাসপাতালের চিকিৎসা ছাড়া সবকছিুই বাইরে থেকে করতে হয়।আর দালালদের খপ্পরে পরে অসহায় রোগীরা সর্বশান্ত হচ্ছে। দ্রুত হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে এলাকার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে সংশ্লিষ্টরা এটাই আমাদের দাবি।

সরাইল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. আনাস ইবনে মালেক জানান, নানাবিধ সমস্যার কারনে রোগীরা যেমন বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি আমরাও পিছিয়ে যাচ্ছি। দ্রুত এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে।

Print Friendly, PDF & Email