শুক্রবার, ২রা নভেম্বর, ২০১৮ ইং ১৮ই কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের অযোগ্য খালেদা জিয়া

নিউজ ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারবেন না বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। যেহেতু দুই আদালত তাকে সাজা দিয়েছেন সেজন্য সংবিধান অনুযায়ী তিনি নির্বাচনের অযোগ্য বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ৫ বছরের সাজার বিরুদ্ধে করা দুদকের আপিল আবেদন গ্রহণ করে খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ মামলায় আপিলকারী অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদের আপিলও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এ দুই আসামিকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ১০ বছরের সাজা বহাল থাকছে। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারের বিশেষ আদালত অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।

দুদকের আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত তাদের তিনটি আপিলই খারিজ করে দিয়েছেন। আমাদের তিনটি আবেদন গ্রহণ করেছেন। এখন জামিন অটোমেটিকটি বাতিল হয়ে যাবে। উনার নির্বাচনে অংশ গ্রহণের প্রশ্নই আসে না।’

সংবিধানে অনুযায়ী খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নৈতিকতা স্খলনের দায়ে কেউ যদি দুই বছরের জন্য দণ্ডিত হন তাহলে পরবর্তী ৫ বছর না যাওয়া পর্যন্ত তিনি নির্বাচন করতে পরবেন না। কাজেই সংবিধানের ৬৬ (২) ডি অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনের প্রশ্নই আসে না। আপিল করলেও তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। কারণ এখানে দুইটি আদালতের রায় হয়ে গেছে।’

এর আগে মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর)জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বাড়িয়ে ১০ বছর করার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগে। এ রায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ মামলার অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বাকি চার আসামি হলেন সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ এবং জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান। পাশাপাশি ছয় আসামির প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।

রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে ওইদিন বিকালে (৮ ফেব্রুয়ারি) নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এতদিন তিনি সেখানেই ছিলেন। বর্তমানে চিকিৎসার জন্য তাকে বিএসএমএমইউতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) নেওয়া হয়েছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি (অনুলিপি) হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ খালাশ চেয়ে আপিল করেন। পাশাপাশি এ মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রিভিশন আবেদন করে দুদক। বাংলা ট্রিবিউন