বৃহস্পতিবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১২ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

‘ক্ষমা’ চাইলেন ওবায়দুল কাদের

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃতীয় দফা সাংগঠনিক সফরে সড়কপথে ঢাকা থেকে কক্সবাজার নির্বাচনী যাত্রা করছেন ওবায়দুল কাদের। শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে আটটায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয় থেকে তার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রওয়ানা করে। পথে তারা বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করেন।

এদিকে আজ বিকালে বিএনপি নেতাদের অংশগ্রহণে ঢাকায় ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র সমাবেশ চলার মধ্যে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।

সেখানে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী দলগুলোর কথিত যে জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা এসেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, আওয়ামী লীগের মত জনপ্রিয় দলকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য হয় কীভাবে? হবে না, ওটা ‘সাম্প্রদায়িক ঐক্য’ হয়েছে।

শনিবার ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ডাকে নাগরিক সমাবেশ হয়। সেখানে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজ্যনৈতিক দলের নেতারা যোগ দেন। সেখান থেকে জাতীয় ঐক্য গঠনের আহ্বান আসে এবং আগামী ১ অক্টোবর থেকে সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।

এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রাচীন দল। আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় জনপ্রিয়তায় দলটি ৬৪ শতাংশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬৬ শতাংশ জনপ্রিয়। এ দলকে বাদ দিয়ে যারা জাতীয় ঐক্যের স্বপ্ন দেখছেন তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন।’

বিএনপিকে এই ঐক্যে রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তথাকথিত জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে নিয়ে কিসের ঐক্য। এই ঐক্য সাম্প্রদায়িক। সাম্প্রদায়িক শক্তি কী বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে? যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করেছে তাদের ঐক্যে জনগণ নেই।’

অতীতের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘চাঁদেরও কলঙ্ক আছে। আমরা অনেক কাজ করেছি। তাই ছোটখাট ভুলত্রুটিও হতে পারে। বাংলাদেশ এখন মহাকাশে পৌঁছে গেছে। দেশের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে ক্ষমা করে আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট দিন।’

বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি মিথ্যাচারের দল। এরা প্রতারক। দেশে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণের বিষয়টিও ছিল ভুয়া।’ দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে জনগণ আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে বলে মনে করেন তিনি।

কেন্দ্র রক্ষা, কেন্দ্র কমিটি ও পোলিং এজেন্ট দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফেনীতে সব ভালো আছে। ঠোকাঠুকি করবেন না। অসুস্থ প্রতিযোগিতা করবেন না। মশারির মধ্যে মশারি খাটাবেন না। ঘরের মধ্যে ঘর তৈরি করবেন না। সবার আমলনামা শেখ হাসিনার কাছে আছে। জনগণের কাছে যিনি বেশি গ্রহণযোগ্য তাকে মনোনয়ন দেবেন। শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন।

নিজ নির্বাচনী এলাকার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘যতবার আন্দোলন ডাক দেয়া হয় ততবার ব্যারিস্ট্রার মওদুদ দুর্বার আন্দোলনের হুংকার দেন। এর আগেই তিনি রাতের আঁধারে পালিয়ে যান। মৃত ব্যক্তির সার্টিফিকেট জাল করে একটি বাড়ি ৪০ বছর দখল করে রেখেছেন। তার কাছে নোয়াখালী তথা দেশের গণতন্ত্র নিরাপদ নয়।’

জেলা সভাপতি আবদুর রহমান বি.কম সভায় সভাপতিত্ব করেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীমের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

সভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরু, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।সূত্র: লাইভ২৪বিডি