সোমবার, ১লা জুলাই, ২০১৯ ইং ১৭ই আষাঢ়, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ

বাবা-মায়ের লাশ নিতেও আসে না সন্তানরা!

news-image

নিউজ ডেস্ক।। আব্দুল হালিম নামে মিরপুর এলাকার এক বয়স্ক বাবার ঠাঁই হয়েছিল কল্যাণপুরের ‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি বৃদ্ধাশ্রমে। কিন্তু বৃদ্ধাশ্রমে আসার ছয় মাস পরেই মারা যান তিনি। খবর দেয়া হয়েছিল তার সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের। তবে বাবা মারা যাওয়ার খবর শুনে ৭ ঘণ্টা পার হলেও মিরপুর থেকে কল্যাণপুরে দেখতে আসেনি তার কোনো সন্তান। অবশেষে বৃদ্ধাশ্রমের নিজ খরচে সেই বাবার লাশটি দাফন করা হয়।

শুধুমাত্র আব্দুল হালিম নন, আরও অনেক বাবা-মা বৃদ্ধাশ্রমে মারা যাওয়ার পর তাদের সন্তানরা লাশটি পর্যন্ত নিতে আসেন না। ‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে ওই বৃদ্ধাশ্রমের মালিক মিল্টন সমাদ্দার দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে এসব কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র মিরপুরের এই আব্দুল আলিমই না ভাই, আরও অনেকের এমন সন্তান দেখেছি। কি বলবো, বলার ভাষা খুঁজে পাই না। ১৪ মাস আমাদের এই বৃদ্ধাশ্রমে থাকার পরে এক বাবা মারা গিয়েছিলেন। এরপর তার পরিবারের লোকদের খবর দিয়েছিলাম। খবর পেয়ে তার পরিবার থেকে ৩টা গাড়ি নিয়ে লাশ দেখতে এসেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো। তারা কেউই সেই বাবার লাশ বাড়িতে নিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করতে চাইছিল না। পরে আমরা নিজেরাই তার ব্যবস্থা করি।’

মিল্টন সমাদ্দার আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে গত ৪ বছরে ২৭ জন বাবা-মা মারা গেছেন। যাদের বেশির ভাগকেই আমরা নিজেরা কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমরা বেশিরভাগ লাশগুলো মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করি। তবে একটি স্থায়ী কবরস্থানের ব্যবস্থা থাকলে আমাদের এবং মারা যাওয়া বাবা-মায়ের সন্তানদের জন্য একটা উপকার হবে। কারণ অনেক বাবা-মা মারা যাওয়ার পরে আমরা তাদের দাফন করে ফেলি। কিন্তু যদি আমাদের নিজস্ব কবরস্থানে দাফন করতে পারতাম, তাহলে কোনো দিন তাদের সন্তানরা আসলে অন্ততপক্ষে দেখাতাম এই যে এটাই তোমার বাবা-মায়ের কবর।’

‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ এর এই পরিচালক বলেন, ‘ যদি স্থায়ীভাবে আমরা কবর দিতে পারতাম। তাহলে সবগুলো মানুষের একটা করে ছবি তুলে, তাতে একটা করে সিরিয়াল নম্বর দেয়া যেত। আর সেই সিরিয়াল নম্বর অনুযায়ী কবরেরও একটা সিরিয়াল নম্বর থাকতো। তবে অনেক বছর পরেও যদি কোনো সন্তান তাদের ভুল বুঝতে পেরে বাবা-মায়ের কবর খুঁজতে আসেন। তাহলে সেই সিরিয়াল নম্বর ধরে আমরা দেখাতে পারতাম তাদের কবর কোনটি।’

অসহায় ও আশ্রয়হীন বৃদ্ধদের খুঁজে খুঁজে নিজের গড়ে তোলা ‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে’ আশ্রয় দেন বৃদ্ধাশ্রমের মালিক মিল্টন সমাদ্দার। মূলত নিজের ব্যক্তিগত উপার্জনেই ৩২ বছর বয়সী এই যুবক চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটি। নিজের ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সকল বৃদ্ধাদের ভরণপোষণ করান তিনি। আর তার এ কাজে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী মিঠু হালদার। শুধু বৃদ্ধ নয় মানসিক ভারসাম্যহীন ও প্রতিবন্ধীদেরও আশ্রয় দেন তারা। এমনকি মৃত্যৃর পর তাদের দাফন-কাফনের দায়িত্বও পালন করেছেন এই দম্পতি।

বৃদ্ধ ও ভারসাম্যহীনদের জন্য রাজধানী কল্যাণপুর এলাকায় একটি বাড়ির ছয় তলার নিচ তলার দুই ইউনিট ও আরেকটি দোতলা বাড়ির নিচ তলার পুরোটা নিয়ে তৈরি করছেন চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নামক ওই বৃদ্ধাশ্রমটি। তার প্রতিষ্ঠানে ১৫ জন কর্মী রয়েছেন। যারা এসব বয়স্ক বাবা-মায়ের দেখাশোনা করেন। বর্তমানে মোট ২৩ জন বাবা ও ৩২ জন মা মিলে মোট ৫৫ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন এই বৃদ্ধাশ্রমে। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।

এ জাতীয় আরও খবর

এখন থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কেনা যাবে না মোটরসাইকেল!

হিন্দু পুরুষদের উচিত মুসলিম নারীদের প্রকাশ্যে গণধর্ষণ করে বাজারে ঝুলিয়ে রাখা: বিজেপি নেত্রী

আবারো ভারতে এক মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা

মাত্র ৫৫ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহারে, বিল এসেছে ৩৫ হাজার টাকা

পারলেন না বাংলাদেশের নোবেল, চ্যাম্পিয়ন হলেন অঙ্কিতা

শেষের দিকের ওভারে ধোনির ব্যাটিং ছিল সন্দেহজনক: ভারতের সাবেক ক্রিকেটার

বাঁশের পর এবার কালভার্ট নির্মাণে কলাগাছ!

হাতে ৫ উইকেট রেখে না জেতার চেয়ে ৩০০ রান করার আগে অলআউট হয়ে যাওয়াও ভালো ছিল: সৌরভ গাঙ্গুলি

এবার চট্টগ্রামে প্রকাশ্য যুবককে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা! (ভিডিও)

কুষ্টিয়ার লড়াকু এক নারীর নাম রূপন্তী

নিথর দেহে বাড়ি ফিরল সেই বাবা-মেয়ে

আমাকে মাফ করে দিস রিফাত