মঙ্গলবার, ২রা জুলাই, ২০১৯ ইং ১৮ই আষাঢ়, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে গ্যালারির সমর্থনে পিছিয়ে থাকবে বাংলাদেশ?

news-image

স্পোর্টস ডেস্ক।। ছুটি কাটিয়ে বার্মিংহামে টিম হোটেলে ফিরেছেন মাশরাফি। কাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বার্মিংহামে এসে একই হোটেলে উঠেছে ভারতীয় দল। হঠাত্ই তাই মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে দেখা হয়ে গেল মাশরাফি বিন মর্তুজার।

এক সহকর্মী বলছিলেন, ‘বার্মিংহামকে ঠিক ইংল্যান্ডের কোনো শহর বলে মনে হয় না!’ হওয়ার অবশ্য কারণও নেই। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের ইমিগ্রেশন পেরিয়ে ৩০ মিনিটের ড্রাইভের চারপাশে শুধু উপমহাদেশীয় লোকজন আর মনিহারি দোকানই চোখে পড়েছে। গ্রেডিংয়ে বাংলাদেশ তিনে। দুই আর একে পাকিস্তান ও ভারত। ২ জুলাই তাই অবধারিতভাবে গ্যালারির সমর্থনে ১-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে ম্যাচ শুরু করবে বাংলাদেশ দল।

১-২ কেন? রাজনৈতিক রেষারেষির প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের ষোলো আনা সমর্থন তো বাংলাদেশের পাওয়ার কথা! কিন্তু ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইডেন-অভিজ্ঞতাই উল্টে দিয়েছে অঙ্কটা। সেদিন বড় আশা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তামিম ইকবালরা। কিন্তু ইডেনের গ্যালারি প্রবল আক্রোশে বিরুদ্ধাচরণ করেছিল বাংলাদেশ দলের। বিস্ময়করভাবে দিনভর ইডেনের গ্যালারি স্লোগান তুলেছিল ‘পাকিস্তান’, ‘পাকিস্তান’! না, পশ্চিমবঙ্গে পাকিস্তানি প্রবাসী থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। দুটো হাইপোথেসিস আছে ওই সমর্থনকে ঘিরে। প্রথমত, বিহারের লোকজন গোপনে পাকিস্তান সমর্থক। দ্বিতীয়ত, কলকাতার বাঙালি এপারের বাঙালিদের খুব একটা পছন্দ করে না। তাই বলে শত্রু দেশের নামে স্লোগান উঠবে!

ওঠে। দুর্বল কোনো রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার দুরভিসন্ধি থেকে শত্রুভাবাপন্ন শক্তিধরদের মিতালি তো আর ইতিহাসে কম নেই। বিশ্বরাজনীতির ‘এলিট’ শ্রেণিতে নতুন কারো আগমন সহজে মেনে নেওয়া কঠিন যে! তেমনি ক্রিকেটের মানচিত্রে বাংলাদেশের সদর্প অভ্যুদয় ক্রিকেটের স্বীকৃত জমিদারদের মেনে নেওয়া কঠিন। এটাও ধারণানির্ভর। তবে সমাজের উঁচুতলা আর নিচুতলার উত্থান-পতনের গল্পগুলো কিন্তু এমনই।

পেছনের ঘটনা যা-ই হোক, এজবাস্টনে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজারা গ্যালারির দিকে যত কম নজর দেবেন, ততই মঙ্গল। নিশ্চিতভাবেই ভারতের তেরঙ্গার ভিড়ে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে বাংলাদেশের লাল-সবুজ। সমর্থনের পাল্লার আনুমানিক আনুপাতিক হার ৮০:২০ হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। হোম ম্যাচের আঁচ পাবেন বিরাট কোহলিরা। বাংলাদেশের জন্য হবে লোমহর্ষক অ্যাওয়ে ম্যাচ। গ্যালারি হবে ইডেন কিংবা হায়দরাবাদের মতো উত্তাল, যেখানে বাংলাদেশ থাকবে না থাকার মতো করেই। ইংল্যান্ড ম্যাচেও এমন বৈরিতা দেখেনি বাংলাদেশ, যতটা ভারত ম্যাচে আগাম ধারণা করছেন মাশরাফিরা।

অবশ্য গ্যালারি তো আর খেলবে না। আর ইডেন অভিজ্ঞতার কারণে এজবাস্টনে গ্যালারি থেকে অনুপ্রেরণাদায়ী গণসংগীতও শোনার আশায় নেই বাংলাদেশ দল। তবে সাধারণ ভারতীয়দের এমন বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব নিয়ে মৃদু আলোচনা আছে বাংলাদেশ দলের চিলেকোঠাতেও। এমনিতে দুই দলের

খেলোয়াড়দের মাঝে বৈরিতা নেই বললেই চলে। বরং ক্ষেত্রবিশেষে বন্ধুতার কথাই শোনা যায় বেশি। এককালে দুই দলের সিরিজে মাশরাফির সঙ্গে যুবরাজ সিং কিংবা ইরফান পাঠানের ‘দোস্তি’ ছিল বিশেষ আকর্ষণ। শচীন টেন্ডুলকার তো মোহাম্মদ আশরাফুলের বাসায় গিয়ে ডিনারও করেছেন।

আধুনিককালেও খেলোয়াড়দের মধ্যকার সুসম্পর্কে ভাটা পড়েছে বলে শোনা যায় না। আপাত ‘হিমশীতল’ মহেন্দ্র সিং ধোনিও যেমন সময় সুযোগ পেলে আড্ডা দেন বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে। বিরাট কোহলি মাঠে গর্জন-তর্জন দিলেও ড্রেসিংরুমের সামনে কিংবা হোটেলের লবিতে হাসিমুখে কথা বলেন মাশরাফিদের সঙ্গে। রোহিত শর্মা তো বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের দেখা বিশিষ্ট ভদ্রলোক। আবার একটি ম্যাচে ভারতের হারের পর মুশফিকুর রহিমের পরে মুছে ফেলা ‘টুইট’কে বালখিল্যতা বলতেও দ্বিধা করেননি তাঁর কোনো কোনো সতীর্থ। তার মানে, সৌহার্দ্য দুই পক্ষ থেকেই বজায় রাখার নজির রয়েছে।

তবু এমন সুসম্পর্কের গায়েই ম্যাচে কাঁটা দিয়ে ওঠে মাঝেমধ্যে। সাম্প্রতিককালে দুই দলের তিনটি সীমিত ওভারের ম্যাচ শেষ বলে গড়ানোই কি গ্যালারি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন বৈরিতা ছড়ানোর কারণ?

বাংলাদেশ দলের এক সিনিয়র ক্রিকেটারের ধারণা, ‘এটার শুরু ২০১৫ বিশ্বকাপ। সেই থেকে দুই পক্ষই (উগ্র সমর্থক) বাড়াবাড়ি করছে। মাঝখান থেকে গাল খাচ্ছি আমরা ক্রিকেটাররা (হাসি)!’

সেবার ‘নো-বল’ বিতর্ক নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। সেই রেষারেষির বিষ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরিস্থিতি এমন যে দুই দলের আর প্রতিপক্ষ হওয়ার দরকার নেই। ভারতের হার উত্সবে মাতায় ওই জনতাকে। আবার বাংলাদেশের হারে ট্রলের বন্যা বয়ে যায় ওপারে।

এমনটা আগে ছিল ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটকে ঘিরে। তবে কোনোকালেই এমন মাত্রাতিরিক্ত ছিল না। আবার সেই যুযুধান জনতাকেই দেখা গেছে পরস্পরকে উষ্ণ আতিথেয়তা দিতে। ভারত ২০০৪ সালে যখন পাকিস্তানে গিয়েছিল কিংবা পরের বছরই ফিরতি সফরে দুই দেশের দর্শকের মনে হয়েছে পরমাত্মীয়। অথচ ২০১৭ সালে হায়দরাবাদে টেস্ট দেখতে যাওয়া বাংলাদেশি দর্শক কিংবা কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিক, কেউই যথার্থ আতিথেয়তা পেয়েছেন বলে শুনিনি। সমর্থনের ব্যাপারটা বৈরিতার বৃত্ত থেকে কিভাবে যেন আক্রোশের অন্ধগলিতে ঢুকে পড়েছে! ২ জুলাই এজবাস্টনের সম্ভাব্য উত্তাপ তাই অনুমেয়, যা আশঙ্কাজনক।

সাউদাম্পটনের গ্যালারিতে সংখ্যালঘু আফগান সমর্থকদের নাজেহাল করার দায়ে কয়েকজনকে মাঠ থেকে বহিষ্কার করার খবর মিলেছিল বাংলাদেশ দলের পক্ষ থেকে। এজবাস্টনেও আইসিসি যেন নিগৃহীতের জন্য একই সহায়তা দেয়, সমর্থনের উন্মত্ততা থেকে ক্রিকেটকে বাঁচানোর আর কোনো পথ সম্ভবত খোলাও নেই! উৎস: কালের কণ্ঠ।

এ জাতীয় আরও খবর

৫ উপায় বিকাশে প্রতারণার ফাঁদ চেনার

গ্যাসের দাম: বাংলাদেশে বেড়েছে ১৭৫ টাকা, ভারতে কমেছে ১০০ টাকা!

৬ কোটি টাকা লুটপাট জুন ক্লোজিংয়ের নামে

এই ভারী অস্ত্রের উৎস কী, গন্তব্য কোথায়

জানেন কি, আম্পায়ারদের আয় কত?

নরসিংদীতে ‘লাশের টাকা’ আত্মসাৎ করলেন আ’লীগ চেয়ারম্যান! (ভিডিও)

ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ ও মৌসুমী ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে আমড়া

কলেজ ছাত্রীকে ছুরিকাঘাত প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়

স্ত্রী-সন্তানসহ ৯ জনকে হত্যা পরকীয়া সন্দেহে

ভালো ছাত্রী হওয়ায় দুই বছর ধরে ধর্ষণ!

নুসরাত হত্যা মামলা : দুই মাদ্রাসাছাত্রী আদালতে বর্ণনা দিল সিরাজের কুকীর্তির

টস জিতলে ব্যাটিং না বোলিং করবেন মাশরাফি? জানালেন নিজেই!