ভ্যান চালক শাহীনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বিছানায় আহাজারি করছিল ছিনতাইকারীদের চাপাতির কোপে আহত কিশোর ব্যাটারি-ভ্যান চালক শাহীন। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কেনা সংসারে উপার্জন অবলম্বন রিকশা ভ্যান কেনা টাকা পরিশোধের কোন পথ দেখছে না চিকিৎসাধীন শাহীন।
যশোরের পাটকেল ঘাটা থেকে হাসপাতালে আসা শাহীনের স্বজনরা জানান, বসতভিটে ছাড়া শাহীনদের কোনও জমিজমা নেই। সম্প্রতি একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান কেনে তারা। পিতা-পুত্র দুই শিফটে ওই ভ্যানটি চালিয়ে সংসারের হাল ধরে রেখেছিলো। শাহীনের ছোট দুই বোনের পড়া লেখাসহ সংসার চালাতো তারা। জীবিকার সেই শেষ সম্বলটিও নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা। পাশাপাশি শাহীনের বেঁচে থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এর সঙ্গে আছে এনজিওর ঋণের টাকা।
শাহীনের নিকটাত্মীয় দেবাশীষ জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়। শাহীন যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে।
দেবাশীষ জানান, সাতক্ষীরায় ভ্যান ছিনতাইয়ের সময় দুর্বৃত্তদের চাপাতির আঘাতে মাথা ফেটে যাওয়া গুরুতর আহত কিশোর চালক শাহীনের মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (২৯ জুন) রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মাথায় এ অপারেশন শুরু হয়ে রাত ৩টায় অপারেশন সম্পন্ন হয়।
তিনি জানান, মাথায় রক্ত জমাট থাকার আশঙ্কায় তার দ্রুত অপারেশন করা হয়েছে।
স্বজনরা জানায়, যশোর জেলার কেশবপুরের গোলাখালি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শাহীন গত শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে ব্যাটারিচালিত ভ্যান নিয়ে বাবা-মার সংসারের জন্য রোজগারে বেরিয়েছিল। দুপুরের দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ভ্যানটি ভাড়া নেয়। শাহীন তাদের নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ার দিকে রওনা হয়। ধানদিয়া গ্রামের হামজাম তলা মাঠে ঢুকে একটি পাটক্ষেতের পাশে দুর্বৃত্তরা শাহীনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়, নিয়ে যায় শাহীনের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটিও। ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে সে। পরে জ্ঞান ফিরে কান্না শুরু করলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়।
পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন বলেন, এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে শাহীনকে উদ্ধার করে খুলনার আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল শনিবার তার অবস্থার অবনতি হলে বিকালে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।