বুধবার, ১০ই মে, ২০১৭ ইং ২৭শে বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন : স্বীকৃতি মেলেনি ৪৫ বছরেও

AmaderBrahmanbaria.COM
ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬

বিশেষ প্রতিনিধি : রুহুল আমিন। পত্রিকার হকার। ২ ছেলে ৩ কন্যা তার। স্ত্রী মারা গেছেন ৩ বছর আগে। পত্রিকা বিক্রী করে তিনি সংসার চালান। একাত্তুরের রনাঙ্গনের অকুতোভয় এ মু্িক্তযোদ্ধা নিজের জীবনবাজী রেখে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহন করেন। অথচ একের পর এক ৪৫টি বছর পার হয়েছে। অন্তত সাড়ে ৪ দশকেও তিনি মহান মু্িক্তযুদ্ধের স্বীকৃতি পায় নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার অষ্টগ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা সুবেদা আব্দুল আউয়াল মিয়ার ছেলে রুহুল আমিন (৭০)। জীবনের এই দীর্ঘ সময় অফিস আদালতে বাস ও রেল স্টেশনে মানুষের কাছে পত্রিকা বিক্রয় করে জীবনের ঘাণী টানছেন। দীর্ঘ কর্ম জীবনে অতন্ত সাদা মাঠা জীবন যাপন করেছেন তিনি। এখন বয়সের ভারে কাবু হযে পড়েছেন। আগের মত পত্রিকা নিয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যেতে পারছেন না। অভাব অনাটন তার যেন নিত্যসঙ্গী। মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শহরের তার অনেক পরিচিত লোক পত্রিকা ছাড়াই সহানুভুিত দেখিয়ে তাকে সাহায্য করে থাকেন। তার সাথে কথাবলে আমাদের  ব্রাহ্মণবাড়িয়া.কমকে বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজের জীবনকে বাজি রেখে দেশের বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেছি। কিন্তু জীবনযোদ্ধ যেন আমি পরাজিত হয়েছি। তিনি বলেন, আমি রংপুর ৬ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করি। আমার সেক্টর কমান্ডর ছিল হাসিবুল বাদশা। আক্ষেপ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অংশ গ্রহণের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র আমার কাছে থাকলেও রাষ্ট্র আমাকে দেয়নি মুক্তিযোদ্ধের স্বীকৃতি। আমার মুক্তিযুদ্ধার কাগজ পত্র নিয়ে বহুবার জেলা মুক্তিযুদ্ধা অফিসে গেলে তারা কোন আশার আলোর মুখ দেখাই নি। আমার পরিবারে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে নি এমন লোককে মুক্তিযোদ্ধের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। পাচ্ছে রাষ্ট্রের মুক্তিযোদ্ধার সকল সুবিধা। এ কথা কার কাছে বলব। বলার যে জায়গা নেই। চিকিৎসার অভাবে আজ আমি অসুস্থ হয়ে জীবন কাটাচ্ছি। আমার মৃত্যুর আগে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতাম দেশ ও জাতির কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকতাম। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুনুর রশিদ বলেন, সে বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে এরকম দাবি করে কিছু কাগজ পত্র নিয়ে আমাদের কাছে এসেছে। কিন্তু তার পরিবারের আরেক সদস্য তার নাম পরিবর্তন করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সকল সুবিধা নিচ্ছে। আমরা আব্দুল আউয়ালের কাগজ পত্র ঢাকা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যেমে তদন্ত করে আসলেই সে মুক্তিযোদ্ধা কি না বা কোথায় ও তার সাথে জালিয়াতি হয়েছে কিনা তা বের হবে।