বুধবার, ১৪ই জুন, ২০১৭ ইং ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে জমিদার বাড়ি : রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হচ্ছে

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
news-image

---

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরাঞ্চলের উপজেলা বাঞ্ছারামপুর আর স্বাধীনতা যুদ্ধে এই রাজ বাড়িটি বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। পাক-বাহিনী ঘাটি গেড়েছে সদও উপজেলার থানা কম্পাউন্ডে। আর রাজবাড়িটি স্থানীয় মুক্তিবাহিনীর শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রেখেছে  তীর্থরায়ের জমিদার বাড়িটি।কারণ বাড়িটি সুরক্ষিত,নিরাপদ,যুদ্ধ চালানোর জন্য বেশ সুবিধা জনক ছিল।এছাড়া যুদ্ববচলাকালীন সময়ে পার্শ্ববর্তী এলাকার আহত ও ক্লান্ত বিভিন্ন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় স্হল হিসেবে ব্যবহার হতো  এই জমিদার বাড়ীতে।তাছাড়া  শত বছরের পুরনো দৃষ্টিনন্দন,অসাধারন নকশি-আকাঁ জমিদার বাড়ীটি। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামে তিতাস নদীর তীর ঘেষাঁ ১৯১৫ সালে ভারত থেকে নকশা ও রাজমিস্ত্রী এসে জমিদার তীর্থবাসী রায় ৫ একর জমির উপর এই বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ করেন। এই জমিদার বাড়িতে আছে ৩টি পুকুর। পুকুর গুলিতে ছিল বড় বড় মাছ। স্হানীয়রা জানায়, জমিদার তীর্থবাসী রায়ের বাড়িতে একসময়ে বিরাট মেলা বসতো। এই মেলায় গ্রামীণ জনপদে লোকজন ঐতিহ্যবাহী রকমারি জিনিসপত্র কেনাবেচা হতো। শুধু তাই নয় প্রতি বছর শীতকাল আসলেই মাসজুড়ে বসতো কীর্তন ও বাহারী পণ্যেও  মেলা।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা রূপসদী গ্রামের জমিদার তীর্থবাসী চন্দ্র রায় রাজকীয় ভঙ্গিতে ঘোড়ায় চড়ে এই জনপদের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতেন। জমিদার তীর্থবাসী চন্দ্র রায়ের ছেলে মহিষ চন্দ্র রায় এই জনপদে শিক্ষা বিস্তারের জন্য ১৯১৫ সালে সাড়ে ৪ একর ভূমির উপর তার দাদার নামে রূপসদী বৃন্দাবন উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ করেন। স্কুলটি এখন উপজেলার সেরা স্কুল হিসেবে সমাদৃত।একই বছরে তার পিতা তীর্থবাসী স্মৃতি রায় নির্মাণ হয় একটি মঠ । মঠটি নির্মানের পর ১৯৭১-যুদ্ধেও শুরুতেই তীর্থরায়ের বংশধরগণ চীরদিনের জন্য পাড়ি জমান ভারতে।তিনি আর ফিরে  আসেননি আর। দখল হয়ে গেছে জমিদার বাড়ীর বিশাল অংশ।দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে  যে বাড়িটি  নিরাপদ আশ্রয়,সেখানে এখন সন্ধ্যা হলে বসে মাদকের আসর, চলে নানারকম অনৈতিক কর্মকান্ড। স্হানীয়রা দাবী জানান,  সরকারিভাবে তীর্থরায়ের বাড়িটি পুন:সংস্কারের করে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখা এই রাজবাড়িটি  রক্ষণা-বেক্ষণ করা খুবই জরুরী।

এ জাতীয় আরও খবর