সোমবার, ১০ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৬শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ভারতের অঙ্গরাজ্য সিকিমের স্বাধীনতার দাবি উঠলো চীনে

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ৬, ২০১৭

---

ভারতের অঙ্গরাজ্য সিকিমের স্বাধীনতার দাবি উঠেছে। চীনের সংবাদপত্রে সিকিমকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতার দাবি জানানো হয়েছে। সিকিম সীমান্তের ডোকলাম এলাকায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের বিরোধের মধ্যে চীন এবার সিকিমের স্বাধীনতা দাবি করায় ভারত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার চীনের একটি সংবাদমাধ্যমে সিকিমের স্বাধীনতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিংয়ের উচিৎ সিকিমের স্বাধীনতার বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেওয়া।

সম্প্রতি সিকিম লাগোয়া আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার হয়ে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করে চীনা সেনা। সেই অনুপ্রবেশে বাধা দেয় ভারতীয় সেনা। এরপর থেকেই বেইজিং-নয়াদিল্লি কূটনৈতিক সম্পর্ক ফের গরম হয়ে উঠেছে। দুই দেশই সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা চলছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে চীন বহুদিন পর্যন্ত সিকিমকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের ম্যাপে দেখিয়েছে। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সঙ্গে চীনের গন্ডগোল চলে আসছে। যদিও ২০০৩ সালে চীন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে সিকিমকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে মেনে নেয়। বর্তমানের পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ সহ এরকম অনেক, বিশেষ করে মুসলিম দেশের নাগরিকরা সিকিমে নিষিদ্ধ।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চরের স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো অন্যান্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে সিকিমকেও স্বাধীনতার দাবিতে দুই দশকের বেশি সময় ধরে সশস্ত্র সংগ্রাম করে আসছে। এসব স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোকে মদদ দেয়ার জন্য সব সময় চীনকে অভিযোগ করে আসছে ভারত। এরমধ্যে চীনের সংবাদ পত্রে সিকিমের স্বাধীনতার দাবি জানানো নিয়ে ভারত-চীন সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পরই বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই রেশ ধরে ১৯৭৫ সালে সিকিমের রাজপরিবারের হাত থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়। সিকিম ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। তারপরেও এই অঙ্গরাজ্যটি ঘিরে চীনের ‘উসকানি’ নতুন করে সীমান্ত উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে বলে ভারতের কূটনৈতিক মহলের ধারণা।

ভারত ও চীনের সীমান্তে সিকিমের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি সীমান্ত নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে হিন্দুধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে বিখ্যাত নাথু লা পথ দিয়ে কৈলাস ও মানস সরোবরে যাওয়া স্থগিত করা হয়েছে। বেইজিং জানিয়েছে, সীমান্তে সেনার উপস্থিতি না কমালে যেকোনও মুহূর্তে বেঁধে যেতে পারে যুদ্ধ। আর সেক্ষেত্রে কোনওভাবেই চীনকে ভারতকে দায়ী করতে পারবেনা। পাল্টা ভারতের তরফেও চীনকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিকিমের স্বাধীনতার দাবি চীনের সংবাদ মাধ্যমে উঠায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হল বলে মনে করা হচ্ছে।

এ জাতীয় আরও খবর