g রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ বাড়ানোর অনুরোধ | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বুধবার, ২৫শে অক্টোবর, ২০১৭ ইং ১০ই কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ বাড়ানোর অনুরোধ

AmaderBrahmanbaria.COM
অক্টোবর ২৩, ২০১৭
news-image

---

কূটনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে দেশটির ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

রোববার বিকেলে ঢাকায় চতুর্থ যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠক শেষে যৌথ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শুরু হয় জেসিসির বৈঠক। ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।

বৈঠক শেষে জ্বালানি ও তথ্য বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দেশ দুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, ‘বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসন বিষয়ে ভারত যেন তাদের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে সেজন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।’

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘ভারত মনে করে রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা আসলেই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব। কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নও দেখতে চায় ভারত।

এ সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি হউক ভারত তা চায় না। তবে আগে রাখাইনে স্থিতিশীলতা ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। রাখাইনের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিতেও ভারত প্রস্তুত। আশা করছি, আনান কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু করবে মিয়ানমার।’

সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘৭১ সালে বাংলাদেশের পাশে ছিল ভারত এবং আজকের রোহিঙ্গা সংকটেও পাশে আছে। এ কারণে ভারত ৩ লাখ রোহিঙ্গার জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও এাণসামগ্রী পাঠানো হবে।’

এ সময় মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য ভারতের মানবিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।

সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের চ্যালেঞ্জগুলো একই। সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থি ও মৌলবাদ দুই দেশের চ্যালেঞ্জ। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নেওয়া জিরো টলারেন্স নীতির সঙ্গে আমরাও একমত হয়েছি।’

মাহমুদ আলী বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। প্রতিবেশী দুই দেশই পরস্পরের বিশ্বস্ত বন্ধু।’

তিনি জানান, বৈঠকে ২০১৪ সালে দিল্লিতে তৃতীয় জেসিসি বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে অগ্রগতি পর্যালোচনা শেষে দু’দেশের পক্ষে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর ও চলতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনার পরও সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।

ভারতের পক্ষে জানানো হয়েছে, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় চতুর্থ জেসিসি বৈঠকের মাধ্যমে বাণিজ্য, লগ্নি, নিরাপত্তা, কানেকটিভিটি, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, জাহাজ পরিবহন, উন্নয়নমূলক প্রকল্প, পরমাণু সহযোগিতা, শিল্প-সংস্কৃতি এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত ও সম্প্রসারিত হবে।

এ ছাড়া ঢাকা সফরকালে তার আমলেই তিস্তা চুক্তি সই সংক্রান্ত ভারতের প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতির বিষয়টিও বৈঠকে সুষমা স্বরাজকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

২৪ ঘণ্টার সফরে দুপুর পৌনে ২টার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান সুষমা স্বরাজ। জেসিসি বৈঠকে যোগ দিতেই তিনি ঢাকায় এসেছেন।

সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন সুষমা স্বরাজ। এরপর তিনি সোনারগাঁও হোটেলে তার সৌজন্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর দেয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন। এরপর রাতে সুষমা স্বরাজের বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে।

সোমবার বিকেলে দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে সুষমা স্বরাজের। এর আগে সকালে বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন তিনি। এ ছাড়া ভারতের অর্থায়নে বাস্তবায়িত ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন সুষমা স্বরাজ।

এ জাতীয় আরও খবর