শুক্রবার, ৯ই মার্চ, ২০১৮ ইং ২৫শে ফাল্গুন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধা মন্তাজ আলীকে হাসপাতালে দেখতে গেলেন এএসপি মনিরুজ্জামান ফকির

নিজস্ব প্রতিনিধি : এএসপি মনিরুজ্জামান ফকির মুক্তিযোদ্ধা মন্তাজ আলীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পরিবার নিয়ে দেখতে যান। শুক্রবার রাতে সেখানে তিনি ঘন্টাখানেক সময় অতিবাহিত করেন। সাথে তাহার স্ত্রী ও ছোট কন্যা ছিল। ঐ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধার অসুস্থ্যতার খোঁজ খবর নেন, ডাক্তারের সাথে কথাবার্তা বলে তার সার্বিক সহায়তার বিষয়টি পর্যবেক্ষন করেন। এমনকি মুক্তিযোদ্ধার দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা ২জনকে হাসপাতালের পাশের একটি রেষ্টুরেন্টে প্রতিদিন খাবারের ব্যাবস্থা করে দেন।মন্তাজ আলী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ৭৭ বছর বয়সী মন্তাজ আলীর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে। গত কয়েকমাস ধরেই শয্যাশায়ী তিনি। ভিটে-মাটি বিক্রি করে যতটুকু পেরেছেন চিকিৎসা করিয়েছেন পরিবারের লোকজন। অর্থের অভাবে আর চিকিৎসা করাতে পারছিলেন নাতারা।

গত কিছুদিন পূর্বে স্থানীয় এক সাংবাদিকের নিউজের পরিপ্রেক্ষিতে জানতে পেরে অসহায় জীবন যুদ্ধে শেষ লগ্নে লড়াই করা মুক্তিযোদ্ধা মন্তাজ আলীর পাশে দাড়িয়ে ছিলেন সরাইল সার্কেলে নিয়োজিত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি মনিরুজ্জামান ফকির। বর্তমানে ঐ মুক্তিযোদ্ধাকে জেলা পুলিশের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করান এএসপি মনিরুজ্জামান ফকিরবীর মুক্তিযোদ্ধা মন্তাজ আলী সম্পর্কে জানতে চাইলে সিনিয়র এএসপি, সরাইল সার্কেল মনিরুজ্জামান ফকির বলন:, একজন মুক্তিযোদ্ধা! শব্দটা ছোট হলেও এর অর্থটা অনেক কিছু বহন করে। এটা হিমালয়ের চেয়ে বড় একটা শব্দ। আচ্ছা আমাকে যদি বলা হয় আমি দেশের জন্য কি করতেপেরেছি……. আমি কি উত্তর দিব! হয়তো কিছু করে থাকলেও উত্তরটা যুক্তিযুক্ত হবেনা।
কিন্তু আপনি যদি একজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই প্রশ্নটা ছুঁড়ে দেন, আপনিদেশের জন্য কি করেছেন? সাথে সাথে বর্জ্য কণ্ঠে উত্তর আসবে হ্যাঁ! আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি! এই লাল-সবুজের পতাকাটা আমি এনে দিয়েছি। মাতৃভূমি এইদেশটাকে স্বাধীন করতে নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও অস্ত্র ধরেছি। এর চেয়ে আর কি বড় হতে পারে দেশের জন্য! আর এমন একজন বীর যোদ্ধা যদি শুনি চিকিৎসারঅভাবে মারা যাচ্ছে, তাহলে কি আর বসে থাকতে পারি! কখনও না! মধ্যে মধ্যে বিভিন্ন নিউজের কল্যানে শুনতে পাই এই দেশের জন্য যারা যুদ্ধ করেছেন তারা নাকিটাকার অভাবে অর্ধহারে-অনাহারে জীবন যাপন করছেন। আমরা কিন্তু ইচ্ছে করলেই তাদের পাশে দাড়াতে পারি।
দরকার শুধু একটু প্রচেষ্টা। দরকার শুধু একটুভালবাসা। দরকার শুধু একটু সহানুভূতি। তাহলেই আর কোন মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকবে না। সর্বশেষ একটা বাক্য উচ্ছারণকরব……চিকিৎসার অভাবে কোন মুক্তিযোদ্ধার, যেন মৃত্যু না হয়!
Print Friendly, PDF & Email