বৃহস্পতিবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১২ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামার শিল্পের কারিগররা

তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: আর কয়েক দিন পরই ঈদ উল আযাহা। ঈদকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামারপল্লীতে ব্যস্ত সময় পার করেছে মালিক সহ শ্রমিকরা। ভোরের সূর্যোদয়ের থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত কামারপাড়া এখন মুখরিত থাকে লোহা-হাতুড়ির ঠনা ঠন্ , ঠনা ঠন্ শব্দে। তারপরও তারা ভাল নেই। শুধু মাত্র বছরের এই সময়ে কদর বাড়লেও বছরের অন্যান্য সময় থাকতে হয় অনেকটায় হতাশায়। এ কারণে এ পেশা থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেকেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর, নাসিরনগর, সরাইল চুন্ডা, সদর উপজেলার সুলতানপুর উলচা পাড়ায় এলাকায় উত্তরাধিকার সূত্রে গোষ্ঠিগতভাবে বেশ কয়েকটি পরিবার এ কাজ করে থাকেনঅ এদের মর্ধ্যে শহরতলি গোর্কণঘাটের কামারদের হাতের তৈরি জিনিসের কদর রয়েছে দেশব্যাপী। কৃষিনির্ভর এ জেলায় এ বিশাল উপজেলার কৃষক ও গৃহস্তদের নিত্য প্রয়োজনীয় লৌহযন্ত্রের চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জেলা ও উপজেলায় বিক্রি হতো এখানকার কামারের হাতের তৈরি বিভিন্ন লৌহযন্ত্র। কিন্তু এখন আর সে দিন নেই। আসছে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কামার শ্রমিকরা দা, ছুরি, কোড়াল,বটি তৈরিতে ব্যস্ত থাকলেও দেশ-বিদেশের মেশিনের তৈরি বিভিন্ন যন্ত্রপাতির বাজার দখল করায় এখন আর কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় কাঁচামাল লোহার ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির ফলে তাদের হাতের তৈরি বাজার দরে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। মেশিনের তৈরি পন্যের সয়লাভ ও কামরের তৈরি পন্য চাহিদা না থাকার ফলে বাধ্য হয়ে দলে দলে কামারশিল্প ছেঁড়ে অনেকেই চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়।

কথা হয় বেশ কয়েকজন কামার মালিক ও শ্রমিকের সাথে তারা বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আমাদের এই কাজের চাহিদা বাড়ে বছরের অন্য সময় গুলোতে নামে মাত্র কিছু কাজ করে সময় পারকরি। এতে করে সংসারের যে খরচ তা কোনো ভাবেই কুলানো যায়না। শুধু বংশগত প্রথার কারণে অনেকে এ পেশা ধরে রেখেছেন। কামার শিল্পীদের হাতের তৈরী করা লৌহযন্ত্র বিক্রিতারা জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গোর্কণঘাটের কামারদের কদর সারা দেশ জুড়ে। এখানকার তৈরী করা পণ্য রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। কামার শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের সু-দৃষ্টির প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।