শুক্রবার, ৫ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২০শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

নারী-পুরুষ সমতায় এশিয়ায় দ্বিতীয় বাংলাদেশ

নারী-পুরুষের মধ্যে সামাজিক বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে এশিয়ার সেরা ১০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। এশিয়ার এই ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম লিঙ্গ-বৈষম্য দূর করায় কোন দেশ কতটা এগিয়ে আর কারা কত পিছিয়ে তা নিয়ে প্রতিবছরই তালিকা তৈরি করে থাকে। চলতি বছরের এ তালিকায় দেখ গেছে, গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি উন্নতি করে লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে বিশ্বের ৪৭তম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ৷ এক বছরে লিঙ্গবৈষম্য শতকরা ৭২ ভাগ কমিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।

চোখ রাখা যাক এশিয়ার সেরা ১০টি দেশের তালিকা

ফিলিপাইন্স

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ফিলিপাইন্সই বিশ্বের সব দেশের তালিকায় সেরা দশে স্থান পেয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই এশিয়ার সেরা দশের সর্বোচ্চ স্থানটিও তাদের৷ সার্বিকভাবে বাংলাদেশ যেখানে শতকরা ৭২ ভাগ লিঙ্গবৈষম্য দূর করেছে, সেখানে ফিলিপাইন্স করেছে শতকরা ৭৯ ভাগ৷শিক্ষাক্ষেত্রে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ব্যবধান শূন্যে নামিয়ে এনেছে তারা৷

বাংলাদেশ

গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি উন্নতি করে বিশ্বের সব দেশের মধ্যে এবার ৪৭তম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ৷ এক বছরে লিঙ্গবৈষম্য শতকরা ৭২ ভাগ কমিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশটি৷কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত উন্নতি না হলেও আইনসভায়, চাকরিক্ষেত্রের উচ্চপদ এবং ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে এই এক বছরে বাংলাদেশ চোখে পড়ার মতো উন্নতি সাধন করেছে বলে মনে করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম৷

মঙ্গোলিয়া

লিঙ্গবৈষম্য দূর করায় উন্নতি দেখিয়ে সারা বিশ্বের মধ্যে ৫৩তম স্থান পেয়েছে এশিয়ার এই দেশ৷ তবে এশিয়ার সেরা দশে তারা রয়েছে তৃতীয় স্থানে৷ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মঙ্গোলিয়ার উন্নতিও প্রশংসনীয়, তবে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে, বাংলাদেশের উন্নতি সেই তুলনায় অনেক বেশি৷

লাওস

আফ্রিকার বাইরে একমাত্র দেশ লাওস, যারা টানা দ্বিতীয় বছরের মতো কায়িক শ্রমনির্ভর কাজে বেতনবৈষম্য দূর করেছে, নারীর অংশগ্রহণও বাড়িয়েছে৷ তবে নিরক্ষরতা দূরীকরণে সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা অবনতির ফলে অনেক ক্ষেত্রে একই কাজে নারী-পুরুষের বেতনবৈষম্য কিছুটা বেড়েছে৷

সিঙ্গাপুর

অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ আরও বেড়েছে৷ কায়িক শ্রমনির্ভর কাজেও নারীরা এগিয়ে আসছেন আগের চেয়ে বেশি হারে৷ স্বাস্থ্য খাতেও বৈষম্য দূর করে প্রশংসা কুড়িয়েছে সিঙ্গাপুর৷

ভিয়েতনাম

সাম্প্রতিক সময়ে মন্ত্রীত্বের মতো দায়িত্বে নারীর সুযোগ না বাড়িয়ে বরং কমিয়ে দিয়েছে ভিয়েতনাম৷ তারপরও অনেক চাকরিতে বেতনবৈষম্য কমিয়ে এবং শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর সুবাদে এশিয়ার সেরা ১০ দেশের তালিকায় ষষ্ঠ স্থান পেয়েছে তারা৷

থাইল্যান্ড

মন্ত্রীত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও নারীরা এখন বেশি পাচ্ছে বলে দেশটির প্রশংসা করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম৷ এছাড়া প্রযুক্তিনির্ভর কাজে এবং অন্য অনেক পেশায় নারী-পুরুষের বেতনবৈষম্য দূর করেছে থাইল্যান্ড৷ এ কারণেই তাদের সপ্তম স্থানে রাখা হয়েছে৷

মিয়ানমার

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইনডেক্সে নতুন সংযোজন মিয়ানমার৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রোহিঙ্গা নির্যাতনের জন্য বেশি আলোচিত-সমালোচিত দেশটি মাধ্যমিক ও টারশিয়ারি পর্যায়ের শিক্ষায় নারী-পুরুষের বৈষম্য কমিয়ে এনেছে৷ তবে সংসদে এবং চাকরিক্ষেত্রে উচ্চপদে নারীর সুযোগ এখনো কম বলে মিয়ানমারের সমালোচনাও করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম৷

ইন্দোনেশিয়া

মূলত অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর সুযোগ-সুবিধা পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করেই ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স’ প্রকাশ করে আসছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম৷ এসব বিবেচনায় এশিয়ার সেরা ১০ দেশের মধ্যে নবম অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া৷ লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে সাম্প্রতিক উন্নতির ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দেশটি বেতনবৈষম্য কমানো, রাজনীতিতে সুযোগ বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে৷

কম্বোডিয়া

২০০৬ সাল থেকে ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স’ প্রকাশ করে আসছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম৷ সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের সর্বশেষ ইনডেক্সে এশিয়ার সেরা ১০টি দেশের মধ্যে দশম স্থানে রয়েছে কম্বোডিয়া৷ নারীর ক্ষমতায়নে দেশটির সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম৷ বলা হয়েছে, চাকরিতে উচ্চপদে, ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষকতায় নারীর অংশগ্রহণ যথেষ্ট বেড়েছে৷