রবিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১৫ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

আমাকে দিয়ে খারাপ কাজ কিছুতেই করানো যাবে না : আনুশকা শর্মা

গ্ল্যামারাস চরিত্রে বেশি দেখা যায় আনুশকা শর্মাকে। এবার শরত কাটারিয়া পরিচালিত সুই ধাগা ছবিতে সরল সাদাসিধে এক গৃহবধূ ‘মমতা’র চরিত্রে অভিনয় করলেন। যশরাজ ফিল্মসের অফিসে বলিউডের তারকা অভিনেত্রী আনুশকা শর্মার মুখোমুখি হলেন প্রথম আলোর। সাক্ষাৎকার শুরুর আগেই শর্ত ছিল, কোনো ব্যক্তিগত প্রশ্ন নয়। এমনকি ‘বিরাট-পত্নী’কে ক্রিকেট সম্পর্কে প্রশ্নও করা যাবে না। তাই এই আড্ডায় উঠে এল সুই ধাগার সঙ্গে আনুশকার আরও কিছু কাজের কথা।

প্রশ্ন: সুই ধাগা ছবির ট্রেলার সবাই দারুণ পছন্দ করেছে। আজ প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে ‘মমতা-মৌজি’ (আনুশকা ও বরুণ ধাওয়ানের চরিত্রের নাম)। কী রকম লাগছে?

উত্তর: সত্যি এটা অনেক বড় সাফল্য। দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। আজ আমাদের চরিত্রের সঙ্গে সাধারণ মানুষ রিলেট করতে পারছেন। আমরা প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের মনে জায়গা করতে পেরেছি। এটা দারুণ ব্যাপার। ট্রেলারেই এতটা জনপ্রিয়তা পাব, ভাবতেই পারিনি।

প্রশ্ন: ‘মমতা’র চরিত্রটা করার সময় কি মনে হয়েছিল, হিন্দি ছবির দুনিয়ায় একটা বিরাট পরিবর্তন আনতে চলেছেন?

উত্তর: আমরা অভিনয়শিল্পীরা সবার কাছে পরিচিত। তাই আমরা সহজে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি। আমাদের কথা মানুষ শোনে। আমরা সমাজের বুকে সচেতনতা গড়ে তুলতে পারি। তবে এটা বিপ্লব বা বিরাট কোনো পরিবর্তন কি না, তা বলতে পারব না। ছবি মুক্তি পেলে বোঝা যাবে আমরা আদৌ কতটা সফল হতে পেরেছি।

প্রশ্ন: আপনার অভিনয়জীবনের গ্রাফ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। তখনকার আনুশকার চেয়ে আজকের আনুশকার মধ্যে কতটা বদল এসেছে?

উত্তর: বদল তো অনেক এসেছে। আজকের আনুশকার চিন্তাভাবনা অনেক ভালো। এখন অনেক ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারি। এখন আমার মধ্যে সচেতনতা অনেক বেড়েছে। এখন আমি অনেক বেশি পরিণত।

সুই ধাগা ছবির পোস্টার
সুই ধাগা ছবির পোস্টার
প্রশ্ন: ‘মমতা’র সঙ্গে কোথাও নিজেকে কি মেলাতে পারেন?

উত্তর: প্রথমে ‘মমতা’র কথা শুনে মনে হয়েছিল যে আমি কী করে এই চরিত্রটা করব! আমি নিজেকে এই চরিত্রের সঙ্গে একটু মেলাতে পারছিলাম না। পরে আমার সঙ্গে মমতার একটা জায়গায় খুব মিল খুঁজে পাই। মমতার মতো আমার মধ্যে লুকানো এক আত্মবিশ্বাস আছে। তবে এই আত্মবিশ্বাস খুব একটা প্রকট নয়। মমতার মতো আমিও লোক দেখানোতে বিশ্বাস করি না। আমি কখনো দেখাই না যে আমি এই করতে পারি, আমি সেই করতে পারি। চুপচাপ নিজের কাজটা করে যাই। আর সবার নজরে ঠিকই আসি। আর এসব কিছু আমায় সাহস জোগায়। মমতার মতো আমিও জীবনে ঝুঁকি নিতে ভালোবাসি। আমাদের আর একটা মিল হলো আমরা
দুজনেই সত্যের পথে চলতে ভালোবাসি। আমাকে দিয়ে খারাপ কাজ কিছুতেই করানো যাবে না। মমতার মধ্যে এসব দেখেই আমি চরিত্রটা করতে উৎসাহিত হই।

প্রশ্ন: এই আত্মবিশ্বাস থেকেই কি আপনার নিজস্ব পোশাক লেবেল ‘নুশ’ এবং প্রযোজনা সংস্থার জন্ম?
উত্তর: তা বলতে পারেন। তবে আমার ভাই না থাকলে হয়তো আমি এই প্রযোজনা সংস্থা খুলতাম না। সবার মিলিত প্রয়াস আছে এসব কিছুর পেছনে। আমি অনেক দিন থেকেই নিজস্ব একটা ব্র্যান্ড সৃষ্টি করতে চেয়ে ছিলাম। ‘নুশ’ জন্ম নেওয়ার পাঁচ বছর আগে থেকে আমি এর ওপর কাজ করেছি। আমি তো বরাবরই প্রথার বাইরে গিয়ে কাজ করতে ভালোবাসি। অনেকের কাছে সেটা অস্বাভাবিক লাগতে পারে।

প্রশ্ন: শুনেছি, আপনার মা ভালো সেলাইয়ের কাজ করতেন। তাই ‘মমতা’ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে কি কোথাও মায়ের প্রভাব ছিল?
উত্তর: আমার মা খুবই প্রতিভাবান। তিনি খুবই ভালো সেলাইয়ের কাজ করেন। সালোয়ার-কামিজ বানাতে পারতেন। মায়ের হাতের ক্রাফট, এমব্রয়ডারি খুব ভালো। একটা সময় অতিরিক্ত পয়সা রোজগারের জন্য তিনি সেলাই করতেন। স্কুলের জামাকাপড় মা বানিয়ে দিতেন। কারণ, স্কুল থেকে তা কিনতে গেলে বেশি দাম পড়ত। আমার বন্ধুরা স্কুল থেকে জামা নিত, আর আমি নিতে পারতাম না বলে খুব খারাপ লাগত। কিন্তু এখন বুঝি মা কতটা কষ্ট করেছেন। মা যখন সেলাই করতেন, সেই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আমার মনের মধ্যে ধরা ছিল। ছবিতে কাজ করার সময় তার প্রভাব তো নিশ্চয় ছিল।

প্রশ্ন: আপনি নিজে কতটা সেলাই পারেন?
উত্তর: স্কুলে পড়ার সময় ক্রাফট করেছি। এই ছবিটা করতে গিয়ে আমি এমব্রয়ডারি করা শিখেছি। ছবিজুড়েই আমি এমব্রয়ডারি করেছি। এমনকি সেটে অবসর সময়েও আমি এমব্রয়ডারি করতাম। আমি ক্রসস্টিচ, কাঁথা, ব্যাক স্টিচ, ফ্রেঞ্চ নট—এসব করাও শিখেছি।
সূত্র: প্রথম আলো