রবিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১৫ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

‘তার প্রতিটি কথা আমরা মনোযোগ দিয়ে শুনি’

বিনোদন ডেস্ক।। টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ব্যস্ত অভিনেতাও তিনি। সম্প্রতি জয়দেবপুরের ‘রাজ বাগান’ শুটিং হাউসে এ অভিনেতা একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং শুরু করেছেন। টম ক্রিয়েশন্স প্রযোজিত ও রওনক হাসান পরিচালিত নাটকটির নাম ‘বিবাহ হবে’। গত মঙ্গলবার রাতে শুটিংস্পটে এ নাটক ও অন্য অনেক প্রসঙ্গে কথা হয় মোশাররফের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেনÑ জাহিদ ভূঁইয়া
‘বিবাহ হবে’ ধারাবাহিকের গল্প কি কমেডি ঘরানার?

কমেডি না বলে রোমান্টিক কমেডি বলতে পারেন। নাটকের সংলাপে ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহৃত হচ্ছে। গল্পের শুরুটা রসিয়া গ্রামের এক দম্পতি রতন (শহীদ উন নবী) ও পরীকে (জাহারা মিতু) নিয়ে। তাদের প্রেম-ভালোবাসা দেখে গ্রামের মানুষের মনে ঈর্ষা হয়। সবারই ইচ্ছে জাগে বিয়ে করার।

নাটকে আপনি কী চরিত্রে অভিনয় করছেন?
আমার চরিত্রের নাম তকদীর। দুবাই থেকে দেশে ফিরে বিয়ে করতে যায় সে। সেখানে দুই বোন দিপালী-রুপালী নামের মধ্যে তার কনফিউশন তৈরি হয়। এর পর সে বিয়েটা করতে চায় না।

নাটকের নির্মাতা অভিনেতা রওনক হাসান। তার নির্দেশনায় কাজ করতে কেমন লাগছে?
বেশ ভালো। সহশিল্পী হিসেবে আমরা অনেক নাটকে অভিনয় করেছি, যার অধিকাংশই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এবার তার পরিচালনায় ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছি। আশা করি এটি নিয়েও দর্শকের ভালো সাড়া পাব। নির্মাতা হিসেবে রওনককে বেশ পরিশ্রমী মনে হয়েছে। প্রতিটি দৃশ্যে নিজে সংলাপ বলে বলে অভিনয়শিল্পীদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এতে তরুণরা খুব সহজেই ক্যামেরার ডায়ালগ আর এক্সপ্রেশন দিতে পারছেন।

ইউনিটের সবাই বেশ আনন্দ নিয়ে কাজ করছেন। অন্যান্য শুটিংয়ে এ রকম দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না বললেই চলে…
এটা আমিও খেয়াল করেছি। বেশ কদিন হলো এখানে শুটিং করছি, এখন পর্যন্ত কাউকে বিরক্ত হতে দেখিনি। সবাই খুব আনন্দ করছি, গানবাজনা করছি, রাতে বারবিকিউ করছি। অধিকাংশ নাটকের সেটে সবাইকে কপাল কুঁচকে রাখতে দেখেছি। কিন্তু এখানে এমনও হয়েছে, আমি বকাবকি করছি, অথচ কেউ কিছু মনে করছে না।

এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি। ৯১তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস তথা অস্কারে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ডুব’। সংক্ষিপ্ত তালিকায় আপনার অভিনীত ‘কমলা রকেট’ ছবিটিও ছিল। শেষ পর্যন্ত ছবিটি যাচ্ছে না বলে কি হতাশ হয়েছেন?
আমি কখনো হতাশ হইনা। আর এ ইস্যুতে তো প্রশ্নই আসে না। অস্কারে ছবি পাঠানোর জন্য তৈরি বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটির কমিটি সেরা ছবিটিকেই নির্বাচিত করেছেন। ‘ডুব’ ছবিটির জন্য আমার শুভকামনা থাকল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে। কিছু দিন আগে এ ছবির জন্য পরিচালক হিসেবে ভারতীয় নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রশ্নটা হলো, আমাদের দেশের নির্মাতা হলে কি ভালো হতো না?
শ্যাম বেনেগাল অনেক বড় নির্মাতা। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। তবে জাতির পিতাকে নিয়ে আমাদের দেশের কোনো নির্মাতা কাজ করলে ভালো লাগত। হয়তো এ চলচ্চিত্রের জন্য বাংলাদেশের কোনো নির্মাতাকে যোগ্য মনে করা হয়নি। তবে বাংলাদেশের পরিচালকও কিন্তু সহকারী হিসেবে কাজ করবে এ চলচ্চিত্রে।

ভালোবাসা থাকলেই ভালো কাজ হয়Ñ কথাটা বিশ্বাস করেন?
ভালোবাসা কিন্তু দুই রকম! এক. প্রেমিকের ভালোবাসা। দুই. রাক্ষসের ভালোবাসা। প্রেমিক আর রাক্ষস দুজনই পেতে চায়। কিন্তু চাওয়ার ধরনটা আলাদা। রাক্ষসের সময়জ্ঞান নেই। সে নগদ পেতে চাইবে। কিন্তু প্রেমিক সময়বুঝে চাইবে। আমাদের প্রেমিক হতে হবে। কাজের প্রতি প্রেম থাকতে হবে। বার্নিশ ছাড়া টেবিল ডেলিভারি দিলে চলবে না। এটা অবশ্য একজন প্রেমিকের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের প্রেমিকগোষ্ঠী হতে হবে।

নতুন যারা কাজ করছেন, তাদের কাজ কেমন লাগছে?
ইন্ডাস্ট্রি এত বড় হয়ে গেছে, অনেককে চিনিই না। দেখা যাবে অনেক বড় সেলিব্রিটি, কিন্তু আমি চিনি না। একসময় সবাই সবাইকে চিনতাম। একটা বিষয় খেয়াল করি, এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী। তবে পেশাদার শিল্পী হতে হলে যা করতে হয়, সেটা করার সময় তাদের নেই। তারা মনে করে, সেটে গিয়ে কিছু একটা করে দিলেই হয়ে যাবে।

আপনারা দুজনই (মোশাররফ-জুঁই) ব্যস্ত থাকেন অভিনয় নিয়ে, এটা নিয়ে ছেলের কোনো অভিযোগ?
অনেকের ধারণা আমরা ছেলেকে সময় কম দেই। কিন্তু এটা ভুল। তাকে নিয়ে প্রায়ই আমরা ঘুরতে যাই। যে সময়টা শুধুই তার জন্য বরাদ্দ। তার প্রতিটি কথা আমরা মনোযোগ দিয়ে শুনি। সবচেয়ে বড় বিষয়, সে আমাদের এবং আমরা তার সঙ্গটা উপভোগ করি। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।