শুক্রবার, ৫ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২০শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে পরকীয়া: যা বলছে আইন

ডেস্ক রিপোর্ট।। ভারতে পরকীয়াকে আর অপরাধ বলে মনে করা হবে না। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক ঐতিহাসিক রায়ে এমনটি ঘোষণা করেছেন সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট।

এ প্রশ্নের জবাবে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী নীনা গোস্বামীর কাছে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দেশে এ সংক্রান্ত আইন খুব বেশি নেই। তবে ৪৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোনও বিবাহিত ব্যক্তি যদি অন্য কোনও বিবাহিত নারীর সাথে জেনেশুনে যৌন সম্পর্ক করে তাহলে তা ব্যভিচার বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে সেই পুরুষটির পাঁচ বছরের কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা দুই দণ্ডের বিধান আছে।

তবে যে নারীর সাথে ব্যভিচার করা হয়েছে – তার ক্ষেত্রে আইনে কোন শাস্তির বিধান নেই, ব্যভিচারকারী নারী ও পুরুষ উভয়ের শাস্তির কথাও বলা নেই।

নীনা গোস্বামী বলেন, তবে এর অপপ্রয়োগ হয়ে থাকে, অনেক সময় অজ্ঞতার কারণেও ব্যভিচারের ঘটনায় নারীকেও আসামি করা হয়েছে এমন দেখা গেছে।

ভারতের আইন অনুযায়ী কোন স্বামী তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগে মামলা করতে পারতেন, কিন্তু কোন স্ত্রীর তার স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যাভিচারের অভিযোগ এনে মামলা করার অধিকার ছিল না। বাংলাদেশের আইনে এ ক্ষেত্রে কি আছে?

প্রশ্ন করা হলে নীনা গোস্বামী জানান, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আইন একই রকম।

‘এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার জন্য নারী সংগঠনগুলো অনবরত দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু পেনাল কোডে কোনও সংস্কারের কাজে এখন পর্যন্ত হাত দেয়া হয় নি। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে মাথায় রেখে বাংলাদেশের নারী সংগঠনগুলো পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নেবার কথা ভাববে এটাই আমি আশা করি’ – বলেন নীনা গোস্বামী।

তিনি বলছেন, বাংলাদেশে এ আইনে যেসব মামলা হয় তা কিছুটা অপপ্রয়োগের মতো করেই হয়। দেখা যায় স্ত্রীকে ‘শাস্তি’ দেবার জন্য বা ‘হয়রানি বা নিয়ন্ত্রণ করার’ ভাবনা থেকে এরকম মামলা হয়।

ভারতে মামলাটির রায়ে বিচারপতিরা বিবাহ-বিচ্ছেদের সাথে পরকীয়ার সম্পর্কের ব্যাপারটি উল্লেখ করেছেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, পরকীয়া বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, কিন্তু একে ফৌজদারি অপরাধ বলা চলে না।

এ প্রসঙ্গে নীনা গোস্বামী বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আদালতে যাওয়ার হার খুবই কম। সরাসরি ডিভোর্স দেবার ক্ষমতাই বেশি প্রয়োগ করা হয়।

তিনি বলেন, ‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী ডিভোর্সের অধিকার প্রয়োগ করা যায় যে কোন সময়। কাজি অফিসে গিয়ে ডিভোর্স ফাইল করার ঘটনাই বেশি দেখা যায়।’ উৎস : বিবিসি বাংলা