বৃহস্পতিবার, ৮ই জুন, ২০১৭ ইং ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: হাজী দানেশ উত্তাল

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ৫, ২০১৭
news-image

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : দু’ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, মানষিক নির্যাতন ও অনৈতিক কাজে বাধ্য করার প্রতিবাদে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছে। এ নিয়ে আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সকাল ১১ থেকে বেলা ১২ পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী চলে এ মানববন্ধন। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে তার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেরি বিভাগের শিক্ষক দীপক কুমার সরকারের বিরুদ্ধে দু’ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, মানষিক নির্যাতন ও অনৈতিক কাজে বাধ্য করার অভিযোগ উঠে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে রিপোর্ট পেশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে ইংরেজি বিভাগের ওই শিক্ষক দীপক কুমার সরকার আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। অন্যদিকে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ভুক্তভোগী ছাত্রীরা জীবনের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। পাশাপাশি এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানিয়েছে, ইংরেজি বিভাগের লেভেল-৩ এর ছাত্রীরা লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগে উঠে এসেছে দীর্ঘদিন যাবত ওই শিক্ষক বিভিন্ন অযুহাতে ছাত্রীদের তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। বাধ্য করে অনৈতিক কাজে। প্রতিবাদ করলে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। কখনো মোবাইলে ম্যাসেস এর মাধ্যমে কুপ্রস্তাব দেয়। এসবে কাজে রাজী না হলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়া হবে বলে হুমকিও দেয়। অভিযোগকারীদের মধ্যে একজন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আমি তাকে খুশি করার জন্য অনৈতিক এবং অসৎ কাজ করবো না। শিক্ষকের উত্তর ছিল কখনো কখনো ভালো কিছু পেতে হলে অনৈতিক এবং অসৎ কাজ করতে হয়্।

এই শিক্ষক এ ধরনের ফাঁদ পেতে চারজন ছাত্রীকে যৌন হয়রারি করছে। এ কাজের জন্য এ শিক্ষক বাঁশেঁর হাট এলাকায় রানীগঞ্জ মোড় হতে ১’শ গজ দূরে সাঁওতালদের কবরস্থানের পাশে একটি ঘর ভাড়া নেন। সকলের আড়ালে এখানে শিক্ষক দীপক কুমার সরকার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের আখড়া গড়ে তুলেন। দিনের পর দিন এসব ঘটনা প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগিরা বিভাগীয় প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ করে। ২০১৬ সালের ২২ ও ২৪ সেপ্টেম্বরে লিখিত অভিযোগের পর বিভাগীয় প্রধান ডীন ড. ফাহিমা খানম ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠান।

অভিযোগ তদন্ত এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সোস্যাল সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিস অনুষদের ডীন ড. ফাহিমা খানমকে চেয়ারম্যান এবং সহকারী প্রফেসর শফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। এবং ৭ কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন প্রফেসর ড. বলরাম রায়, প্রফেসর ড. এটিএম শফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ড, হারনুর রশিদ। তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন।

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সহকারী প্রফেসর শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়গুলো সত্যতা পাওয়া গেছে বলে স্বীকার করেন।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে শিক্ষক দীপক কুমার সরকার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মু আবুল কাসেমের সঙ্গে যোগাযাগ করা হলে তিনি জানান, আমার যোগদানের আগে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি অবহিত হয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

এ জাতীয় আরও খবর