শনিবার, ১০ই মার্চ, ২০১৮ ইং ২৬শে ফাল্গুন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

আন্দোলন-সংগ্রামেই বাঙালি বারবার বিজয় ছিনিয়ে এনেছে : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বারবার বিজয় ছিনিয়ে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (৭ মার্চ) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐকিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ যেখানে শিশুপার্ক ঠিক সেখানে সেদিনের মঞ্চ ছিল। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল সেখানে উপস্থিত থাকার। জাতির পিতা সেখানে দাঁড়িয়েই ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ সেই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন।

‘তার সে ঘোষণা সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে যায়। সত্যি প্রতিটি ঘর দুর্গ গড়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। পাকিস্তানিরা যখন গণহত্যা শুরু করলো তখন বঙ্গবন্ধু ইপিআরের ওয়ারলেস ব্যবহার করে স্বাধীনতা না পাওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বলছিলেন।’ বলেন হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তর সালের যুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ। দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষ সে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আর একশ্রেণির মানুষ হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে, মা-বোনকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। দেশের মানুষকে যখন তিনি আত্মপরিচয়ের সুযোগ করে দিচ্ছিলেন তখনই এলো চরম আঘাত।

তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বুকে ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে জাতির পিতার নেতৃত্বে। দুর্ভাগ্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে ক্ষমতায় আসে স্বাধীনতাবিরোধীরা।

৭ই মার্চে’র ভাষণ বাজানোর কোনও অধিকার ছিল না। যেখানেই বাজানো হতো সেখানে তারা বাধা দিতো। আমি স্যালুট করি আওয়ামী লগের শত শত নেতা-কর্মীকে। শত নির্যাতনের মধ্যেও তারা এ ভাষণ বাজিয়েছিল। কিন্তু, ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না। শত চেষ্টার পরেও তারা এই ভাষণ মুছে ফেলতে পারেনি।

গত আড়াই হাজার বছরে যত ভাষণ হয়েছে গবেষণা করে তার মধ্যে ৪১টি ভাষণ বেছে নেওয়া হয়েছিল। তারমধ্যে স্থান পেয়েছিল এই ভাষণ। ইউনেস্কো এই ৪১টি ভাষণের মধ্যে এই ভাষণটিকে বেছে নিয়েছে। কারণ এটি ছিল অলিখিত। কিন্তু দিক নির্দেশনামূলক।

যে ভাষণের মধ্য দিয়ে অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নের কথা একদিকে উঠে এসেছে অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধ করার জন্য কী কী করণীয় তা বঙ্গবন্ধু বলে দিয়েছিলেন।

আইয়ুব খান তার ডায়েরিতে লিখেছিলেন, যখন কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে বিচারের জন্য নিয়ে আসা হতো তখন তিনি এসে বসার সময় বলতেন ‘জয় বাংলাদেশ’। তোমরা আমার বিচার করে কী করবে, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। যদি আমাকে হত্যা করো, আমার লাশটা বাংলাদেশে পৌঁছে দিয়ে এসো।

১৯৯৬-২০০১ সাল ছিল বাংলাদেশের স্বর্ণযুগ। আমরা ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন সফল করার চেষ্টা করি।

গ্যাস বেচতে চাইনি বলে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। আমরা ভোট বেশি পেয়েছিলাম। কিন্তু, আমাদের সিটে বেশি পেতে দেওয়া হলো না।

Print Friendly, PDF & Email