শুক্রবার, ১৯শে অক্টোবর, ২০১৮ ইং ৪ঠা কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

মোবাইল ফোনে ট্রেনের টিকিট কিনতে বিড়ম্বনা

ডেস্ক রিপোর্ট: ট্রেনে যাতায়াত আরামদায়ক, কিন্তু ট্রেনের টিকিট কাটা নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা। যদিও যাত্রীদের টিকিট কাটা নিয়ে জটিলতা কমাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ই-টিকিটিং ও মুঠোফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটার ব্যবস্থা করেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মোবাইল অ্যাপস চালু করেন। কিন্তু নিম্ন মানের সেবার কারণে যাত্রীরা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

রুপক সদ্য এইচএসসি পাশ করেছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাই ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কাটার চেষ্টা করছেন।

মোবাইল ফোনে টিকিট কাটার যে পদ্ধতি রয়েছে- প্রথমে যেকোনো গ্রামীণ ফোন অপারেটরের নম্বর থেকে মোবাইলে ম্যাসেজ অপসনে গিয়ে tket লিখে ১২০০ নম্বরে পাঠিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। কিন্তু গত দুইদিন ধরে ম্যাসেজ পাঠানোর চেষ্টা করা হলেও ম্যাসেজ ফেইলড দেখাচ্ছে।

এরপর রুপক www.esheba.cns.bd.com ওয়েবসাইটটিতে গিয়ে ট্রেনের টিকিট কাটার চেষ্টা করা হলেও কোনোভাবেই ট্রেনের টিকিট কাটতে পারেনি। কোনোমতে রেজিস্ট্রেশন করলেও টিকিট কাটার জন্য সার্ভারে ঢুকতে পারেননি।

তিনি জানান, শেষ পর্যন্ত টিকিট কাটতে কমলাপুর রেলস্টেশনে আসতে হয় তাকে। ‘আমি ভর্তি পরীক্ষার শিক্ষার্থী। আমি সেই মিরপুর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে আসতে দুই ঘণ্টা সময় চলে গেছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় ক্ষতি।’

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশনের অসুবিধা অনেক দিন থেকেই চলে আসছে। কিন্তু সমস্যাটি এড়িয়ে চলছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকালে কমলাপুরে টিকিট কিনতে আসা নয়ন, বারী ও সোহেল নামের তিন শিক্ষার্থী জানান, তারা দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পরও রেলের দেয়া ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারেননি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ই-টিকিটিং নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। মানুষ প্রতিদিন এখান থেকে সেবা নিয়ে যাচ্ছে। সাময়িক সমস্যা থাকতে পারে। এটা তেমন কিছু না।

তবে আল-আমিন হক নামের টিকিটপ্রত্যাশীর অভিযোগ ভিন্ন। তিনি বলেন, অনলাইনে কিংবা এসএমএসের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহের পরও লাইনে দাঁড়িয়ে মূল টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। তাহলে এতো ঝামেলা করার কী দরকার!

বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটি অ্যাপস চালু করেছে। কিন্তু অ্যাপসটি নিয়ে কোনও প্রচার প্রচারণা না থাকার কারণে জনসাধারণের কাছে এই তথ্য পৌঁছায়নি। passenger information system নামে গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায় এটি।

রেল কর্তৃপক্ষ তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করে ২০১২ সালের ২৯ মে। অনলাইনে ই-টিকিট কিনতে প্রথমে নিবন্ধন করতে হবে www.esheba.cns.bd.com সাইটে। নিবন্ধন-প্রক্রিয়া শেষে সাইটটিতে লগইন করে ক্লিক করতে হবে Purchase Ticket অংশে। এরপর ভ্রমণের তারিখ, যাত্রা শুরুর স্থান, গন্তব্য, ট্রেনের নাম, আসনের শ্রেণি, টিকিটের সংখ্যা নির্বাচন করে ‘সার্চ’ ক্লিক করতে হবে। আসন খালি থাকলে টিকিট কেনার পরবর্তী ধাপ শেষ করতে হবে। ভাড়া পরিশোধ করা যাবে ভিসা কার্ড, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড দিয়েই। ই-টিকিটিং প্রক্রিয়া শেষে প্রদর্শিত পাতাটি প্রিন্ট করে স্টেশনের নির্ধারিত বুথে জমা দিলেই পাওয়া যায় মূল টিকিট। অনলাইনের পাশাপাশি মোবাইল ফোন থেকে এসএমএসের মাধ্যমেও টিকিট কেনা যায়। ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর, রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে ই-টিকিটিং সেবা দেয়ার বুথ রয়েছে।

স্টেশনে দেখা যায়, অনলাইন ও খুদে বার্তার মাধ্যমে দেয়া টিকিটের সারি ছোট। টিকিট কিনতে আসা কেউ কেউ অভিযোগ করেন, অনলাইন ও খুদে বার্তার মাধ্যমে কম টিকিট সরবরাহ করা হয়।আরটিভি অনলাইন