রবিবার, ২২শে এপ্রিল, ২০১৮ ইং ৯ই বৈশাখ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

কংগ্রেসে নবজাতক নিয়ে ভোট দিয়ে ইতিহাস গড়লেন সিনেটর

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রবেশ করে ১০ দিন বয়সী মাইলি ইতিহাস গড়ল। সিনেটর মা কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে ভোট দিতে কন্যা শিশু মাইলিকে বুকে জড়িয়ে সেখানে প্রবেশ করেন।

মাইলির জন্য এই প্রবেশাধিকার তৈরিতে গত বুধবার মার্কিন সিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে নতুন নিয়ম পাস হয়। এর ফলে এখন থেকে কংগ্রেসে ভোট দেওয়ার সময় কোলের শিশুসন্তানকে নিয়ে আসতে পারবেন সিনেটররা। এর আগে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

ছোট্ট মাইলির মা ট্যামি ডাকওয়ার্থ প্রথম মার্কিন সিনেটর যিনি সিনেটর থাকা অবস্থায় মা হয়েছেন। মাইলি তাঁর দ্বিতীয় সন্তান।
নতুন নিয়ম ঘোষণার পর সিনেটররা জানান, পরিবারবান্ধব নীতি তৈরি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় মার্কিন সিনেট। এই পরিবর্তন সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছে। এরপর এক বিবৃতিতে ট্যামি ডাকওয়ার্থ বলেন, ‘আমি আমার সব সহকর্মীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। বিশেষ করে যাঁরা এই নিয়ম তৈরিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। একবিংশ শতাব্দীতে এসে কখনো কখনো নতুন মা-বাবাদের অফিসের দায়িত্ব পালন জরুরি হয়ে পড়ে।’

সিনেটর হিসেবে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে শপথ নিচ্ছেন ট্যামি ডাকওয়ার্থ। পাশে কন্যা আবিগেইল, মা লামাই ও স্বামী ব্রায়ান। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, সিনেটে নতুন নিয়ম পাস হওয়ার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার মায়ের সঙ্গে মাইলি পার্ল বাউলসবে কংগ্রেসে প্রবেশ করে ইতিহাস গড়ে। তবে যে মাইলিকে ঘিরে এই নতুন আইন-উচ্ছ্বাস, তার কিছুমাত্র যে মাইলিকে স্পর্শ করেনি, তা তার মায়ের বুকে গভীর ঘুমে ডুবে থাকা দেখেই বোঝা গেছে! আনন্দে ঝলমল করছিলেন মা ট্যামি ডাকওয়ার্থ। অন্য সিনেটর এসে মাইলিকে আদর করে যাচ্ছিলেন, অভিবাদন জানাচ্ছিলেন মা ট্যামিকে।
ইলিনয়ের সিনেটর ৫০ বছর বয়সী ট্যামি ডাকওয়ার্থ নবজাতক কন্যাকে নিয়ে কাল মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে নাসার পরিচালক নিয়োগে ভোট দেন।

মার্কিন সিনেটর ট্যামি ডাকওয়ার্থের ঝুলিতে বেশ কিছু ‘প্রথম’ রয়েছে। দুই পা হারানো ট্যামি ডাকওয়ার্থ প্রথম শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী, যিনি মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক দলের হয়ে সিনেটর নির্বাচিত হন। তিনি কংগ্রেসে প্রথম এশীয়-আমেরিকান নারী।
২০০৮ সালে ওই সময়ের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে ডাকওয়ার্থ। ছবি: এএফপি।

২০০৪ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে হেলিকপ্টারে কো-পাইলটের দায়িত্ব পালনের সময় তিনি রকেট-প্রপেলড গ্রেনেড (রকেট চালিত গ্রেনেড) হামলার শিকার হয়ে দুই পা হারান। গর্ভধারণে ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) চিকিৎসার মাধ্যমে মা হন তিনি। তবে অনেকগুলো চেষ্টা অসফল হওয়ার পর তিনি গর্ভধারণ করেন। ৪৬ বছর বয়সে তিনি প্রথম মা হন। আবিগেইল নামে জন্ম দেন এক কন্যাসন্তানের। গত সপ্তাহে দ্বিতীয় এই কন্যার জন্ম হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসির এক হাসপাতালে।

বুধবার নতুন আইন পাস হওয়ার পর সিনেট রুলস কমিটির চেয়ারম্যান রয় ব্লান্ট বলেন, ‘মা-বাবা হওয়া খুবই কঠিন একটি কাজ, সিনেটের নিয়ম দিয়ে এটি আরও কঠিন করা উচিত হবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি এটা করতে পেরে। বোঝাতে পেরেছি এই মা-বাবাদের কত প্রয়োজন। আমি ডাকওয়ার্থ ও তাঁর পরিবারকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তাঁর মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য অধীর অপেক্ষা করছি।’

Print Friendly, PDF & Email